‘প্রেম প্রত্যাখ্যানে’ স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে জখম, যুবক আটক

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ‘প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়’ অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যে কোপানোর পর জনতা এক যুবককে ধরে পুলিশে দিয়েছে। 

বিকুল চক্রবর্তী মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2019, 03:09 PM
Updated : 27 April 2019, 03:09 PM

শনিবার উপজেলার কুলাউড়া-ঘাটের বাজার সড়কের মীরশংকর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ছাত্রীকে (১৫) কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কুলাউড়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, স্থানীয়রা জুয়েল আহমদ (২০) নামের একজনকে আটক করলে কুলাউড়া থানা পুলিশ ‍গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। 

সঞ্জয় জানান, বিকালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার কুলাউড়া-ঘাটের বাজার সড়কের মীরশংকর গ্রামে মেয়েটিকে দা দিয়ে এলাপাথাড়ি কোপায় জুয়েল আহমদ।

মেয়েটির মা সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ে দুই বছর আগে উপজেলার ভূকশীমইল ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। তখন থেকে সাদিপুর গ্রামের মৎস্যজীবী বকুল মিয়ার ছেলে জুয়েল আহমদ প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি তিনি স্থানীয় মেম্বার ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছিলেন তারা।

“পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জুয়েলের বাবা ও ভাইদের ডেকে নেয় এবং আর উত্ত্যক্ত করবে না মর্মে তাদের কাছ থেকে মুছলেখা নেয়।”

মেয়টির মা আরও বলেন, এরপর ভয়ে তারা মেয়েকে ওই বিদ্যালয় থেকে কুলাউড়া পৌর শহরের একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। এরপরও জুয়েল প্রায়ই মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত।

“শনিবার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে মেয়েটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে মীরশংকর বাজারে গিয়ে নামে। সেখান থেকে হেঁটে বাড়ি ঢোকার সময় জুয়েল প্রকাশ্যে ধারালো দা দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।”

ছাত্রীর মা আরও জানান, এ সময় তার চিৎকার শুনে  আশপাশের লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

তার মাথায় ও কানে দায়ে কোপ রয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে তিনি জানান।

ছাত্রীর মা বলেন, জুয়েল শুধু তার এই মেয়েকে নয় এর আগে তার বড় মেয়েকেও সে উত্ত্যক্ত করত। তার স্বামী প্রবাসে থাকেন। এখন তার ছোট মেয়ের জীবন সংকটে।

সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, ওই ছাত্রী
৬ষ্ঠ শ্রেণিতে থাকাবস্থায় জুয়েল তাকে উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি জানার পর তারা
স্কুলের শিক্ষক ও তাদের এলাকার মেম্বারসহ জুয়েল ও তার বাবাকে ডেকে নেন। পরবর্তীতে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করবে না মর্মে ওই যুবক ও তার অভিভাবকের মুচলেকা রাখেন।  

কুলাউড়া থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান বলেন, জুয়েলকে আটক করা
হয়েছে। জুয়েলের বাবা ও ভাইকে আটকের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হবে।