একাদশ স্প্যানে দৃশ্যমান পদ্মা সেতুর এক চতুর্থাংশ

পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আরও তরান্বিত হওয়ার যে স্বপ্ন  দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ লালন করে আসছে, তা আরেক ধাপের এগিয়ে গেল একাদশ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে; এতে পদ্মা সেতুর ১৬৫০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হল।

শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2019, 05:29 AM
Updated : 23 April 2019, 05:29 AM

সেতু বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিয়ারের উপর স্প্যানটি বসানো হয়। এ নিয়ে জাজিরা প্রান্তে নয়টি এবংমাওয়া প্রান্তে দুটি স্প্যান বসল।

ইতোমধ্যে সেতুর প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে হুমায়ুন বলেন, “এপ্রিল মাসে দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে। মে মাসে আরও দুইটি এবং চলতি বছরের মধ্যে সব কয়টি স্পেন বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করে তুলবো বলে আশা করছি।”

সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মাওয়ার মুন্সীগঞ্জের কুমারভোগের বিষেশায়িত জেডি থেকে ১১তম স্প্যান নিয়ে একটি শক্তিশালী ক্রেন সোমবার সকালে রওনা হয়ে বিকালে জাজিরা নাওডোবা এলাকায় পৌছায়।  সকাল ৯টার দিকে পিয়ারের উপর বসানোর জন্য স্প্যানটি তোলা হয়।

২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয়, ১০ মার্চ তৃতীয়, ১৩ এপ্রিল চতুর্থ, ২৯ জুন পঞ্চম স্প্যান বাসানো হয়। এরপর ২০১৯ সালে ২৩ জানুয়ারি ষষ্ঠ, ২০ ফেব্রুয়ারি সপ্তম, ২০মার্চ অষ্টম, ও ১৮ এপ্রিল নবম স্প্যান বসানো হয়।

আর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টের ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারে গত বছর এবং চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল ১৩ ও ১৪ পিয়ারের উপর দশ নম্বর স্প্যানটি বসানো হয়।

হুমায়ুন বলেন, ১১ তম স্প্যানটি বসানোর মধ্যদিয়ে পদ্মাসেতুর কাজ আর একধাপ এগিয়ে গেলো।

প্রতিমাসে দুটি করে স্প্যান বসবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের উপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ২৩টি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।

এদিকে ১১ তমস্প্যান বসানোর সংবাদে পদ্মা পাড়ের মানুষ আনন্দ প্রকাশ করেছেন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রায় সাত কোটি মানুষের দীর্র্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে এ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে।

জাজিরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোবারক আলী সিকদার বলেন, “স্বপ্নের পদ্মাসেতু নির্মিত হলে এ এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। কলকারখানা ভরে উঠবে। শ্রমজীবি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। সহজেই মানুষ ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।”

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এবং নদী শাসনের কাজ করছে সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।তবে দুই  প্রান্তের সংযোগ সেতুসহ সেতুটি প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ।