গাজীপুর শিক্ষা অফিসে এমপিওর জন্য ‘ঘুষের তথ্য’ পেয়েছে দুদক

দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা গাজীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস পরিদর্শন করে ‘ঘুষ বাণিজ্যের’ তথ্য পাওয়ার পর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2019, 05:10 AM
Updated : 18 April 2019, 05:16 AM

জেলা শিক্ষা অফিসে এমপিও করানোসহ বিভিন্ন কাজে ঘুষ নেওয়ার খবর সংবাদপত্রে আসার পর দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক (দুদক) শেখ গোলাম মাওলা এবং উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার নিলুফার ইয়াসমিন মঙ্গলবার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যান।

এরপর বুধবার জেলা শিক্ষা অফিসে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করে ঘুষের কারবার বন্ধে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পক্ষ থেকে।

গোলাম মাওলা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গাজীপুরে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও করাতে গেলে উপজেলা পর্যায়ে যে ঘুষ ও দুর্নীতির শিকার হতে হয়, তা আমরা উদঘাটন করতে পেরেছি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যেন সকল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে সভা করা হয় এবং অফিস আদেশ দেওয়া হয়।

“ভবিষ্যতে যদি এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা পর্যায়ের অফিসটি আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।”  

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন, দুদকের নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার গাজীপুরের পাঁচ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে তার কার্যালয়ে বৈঠক হয়।

সেখানে নির্দেশ দেওয়া হয়, কোনো শিক্ষক/কর্মচারী শিক্ষা অফিসে কোনো কাজে গেলে তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে একটি চিঠি সঙ্গে আনতে হবে, সেখানে তার প্রয়োজনের বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। ওই চিঠি ছাড়া কাউকে শিক্ষা অফিসে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।

শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও এবং নিয়ম মাফিক উচ্চতর স্কেলে যাওয়ার জন্য যে কোনো টাকা লাগে না, তা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া এবং কেউ যাতে শিক্ষা অফিসে এসে ‘দালালের খপ্পরে’ না পড়েন সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে সচেতন করার কথাও বলা হয় সভায়।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দাবি করেন, গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিস এবং তাকে ঘিরে যে ‘ঘুষ বাণিজ্যের’ কথা পত্রিকায় এসেছে তা ‘সঠিক নয়’।

“আমি আমার অফিসেরই দুইজন কর্মচারীর ষড়যন্ত্রের শিকার। ইতোমধ্যে তাদের শোকজ করা হয়েছে এবং দুদক কর্মকর্তারাও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।”

রেবেকা সুলতানা বলেন, বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও এবং টাইমস্কেলসহ যাবতীয় কাজ অনলাইনে হয়।

আবেদনকারী প্রথমে অনলাইনে উপজেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেন। সব ঠিকঠাক থাকলে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে জেলা শিক্ষা অফিসে নথি পাঠানো হয়। জেলা শিক্ষা অফিস তা যাচাই-বাছাই করে অনলাইনেই তা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে পাঠান।

এ ব্যবস্থায় আবেদনকারীর জেলা শিক্ষা-অফিস বা ঢাকায় শিক্ষা উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে যাওয়ার দরকার নেই। ফলে জেলা শিক্ষা অফিসে ঘুষ নেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেন রেবেকা সুলতানা।