তবে ইউএনও মোহাম্মদ জাকির হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. খলিলুর রহমান বলেন, তিনি এলাকার দুস্থ ও হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্মাণকাজে তার সম্পৃক্ততা ছিল না।
“এখন সকাল-বিকাল এসব ব্যাপারে অভিযোগ শুনতে হচ্ছে আমাকে। ঘর তৈরির জন্য ইউএনওকে ১০ হাজার টাকা উৎকোচ দিতে হয়েছে বলে শুনতে পাচ্ছি।”
ওই ইউনিয়নের শেলাহাটি গ্রামের মেহেরুজ্জামানের বিধবা স্ত্রী হুরি বেগম (৬০) বলেন, “মাত্র চার-পাঁচ মাস আগে ঘর বানাইছে। এরই মধ্যে ঘরের দুটি আড়া ফেটে গেছে। ঘরের মেঝেতে মাঝ বরাবর বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
“বৃষ্টি হলে ঘরের মধ্যে পানি পড়ে সব জিনিসপত্র ভিজে যায়। পায়খানায় ৮টি রিং বসানোর কথা থাকলেও মাত্র ৬টি রিং বসাইছে। বাচ্চারা ছাড়া সেহানে বড়োরা যাইতে পারে না। আবার এর জন্য ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিছে।”
একই গ্রামের রোকনউদ্দিনের বিধবা স্ত্রী ফুলজাননেছা (৭০) অভিযোগ করেন, “ঘরের জন্য ইউএনও ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। অথচ এহন ঘরের নামে খোপ বানায় দিছে। টিনের লোহা খুইল্যা পড়তিছে। বৃষ্টি হলি ঘরের মধ্যে গবগবাইয়্যা পানি নামে। পায়খানা এত চিহন, তার মধ্যি বসা যায় না।”
শমছেল শেখের বিধবা স্ত্রী ছাহেরা বানু (৬০) বলেন, “পরের বাসায় কাজ কইর্যা চাইয়্যাচিন্তা, ঋণ কইর্যা, ভিক্কা কইর্যা ১০ হাজার টাকা জোগাড় কইর্যা ইউএনও সাবরে দিছি। কিন্তু এহন ঘরের জানালা খসানো যায় না। দরজার কপাট লাগানো যায় না।”
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
তবে ইউএনও মোহাম্মদ জাকির হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “সব ঘর নিয়মানুযায়ীই তৈরি করা হয়েছে। একসাথে অনেক কাঠ কেনা হয়েছে বলে কিছু কিছু ঘরের কাঠের আড়া ফেটে যেতে পারে।”
অন্যান্য অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, “অভিযোগ থাকলে সরেজমিনে দেখতে যাব। যাদের ঘরে সমস্যা হচ্ছে তাদের ঘর মেরামত করে দেওয়া হবে।”
এই প্রকল্পে বরাদ্দ টাকার কিছুই উদ্বৃত্ত হিসেবে ফেরত যায়নি বলে তিনি জানান।
এই প্রকল্পে প্রতিটি এক লাখ টাকা হিসেবে বোয়ালমারী উপজেলায় ৩৭১টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর জানিয়েছে।