তাদের নানা রকমের খাবার, কাপড় ও উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়। ডাক্তার দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
এছাড়া কয়েকশ শিশু তাদের সম্মান জানিয়ে নানা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শহীদজায়ারা জেলা পুলিশের এই আয়োজনে অভিভূত। স্বাধীনতার পর এমন সম্মান তারা আর পাননি বলে মন্তব্য করেন।
শেরপুর পুলিশ লাইন্স মাঠে বর্ষবরণ উপলক্ষে শহীদজায়াদের সংবর্ধনা ও বৈশাখী শিশু উৎসবে অংশ নিতে এসে এভাবেই নিজের অনুভুতি ব্যক্ত করলেন বিধবাপল্লির শহীদজায়া হাফিজা বেওয়া (৬৬)।
১৯৭১ এর ২৫ জুলাই সোহাগপুর গণহত্যায় হাফিজা স্বামী-সন্তান-দেবরসহ পরিবারের আট সদস্যকে হারিয়েছেন। সেদিন ওই গ্রামের ১৮৭ জনকে হত্যা করা হয়।
বৈশাখী শিশু উৎসবে জেলা সদরের ২১টি মাধ্যমিক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও শিক্ষক অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধ ও সোহাগপুর গণহত্যায় শহীদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে সোহাগপুরের পৈশাচিক গণহত্যায় নিহত শহীদজায়াদের করুণ ইতিহাস অভিনয় করে দেখায় স্কুল শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপস্থিত অনেকের চোখ ভিজে আসে।
এর আগে উপস্থিত সকল শিশুদের নাড়ু-মুড়ি, জিলিপি, বাতাসা ও আইসক্রিম দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
বিকালে জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব, মূখ্য বিচারিক হাকিম সুদীপ্ত দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠান আয়োজনে সহয়োগিতা করে সমকাল সুহৃদ সমাবেশ ও ডিস্ট্রিক্ট ডিবেট ফেডারেশন।
এ আয়োজন সর্ম্পকে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, “বাঙালির অস্তিত্ব হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ না হলে আমরা আমাদের প্রিয় দেশ পেতাম না। দেশ স্বাধীন না হলে পহেলা বৈশাখ পালনের কথা আমরা কল্পনাও করতে পারতাম না।
“শহীদদের কাছে আমরা ঋণী। সেই দায়বদ্ধতা থেকে পুলিশ বিভাগ ভিন্নধর্মী বর্ষবরণের ব্যবস্থা করেছে।”
হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, পুলিশ বিভাগের এ আয়োজনে সবাই মুগ্ধ হয়েছে। এ ধরনের আয়োজন শিশুদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। তারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।