আসামিরা হলেন হাতিকাটা গ্রামের মধুময় বিশ্বাসের ছেলে মনোজ কুমার বিশ্বাস ও দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হাসান শেখের ভাই শাহজাহান শেখ।
প্রধান শিক্ষক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মনোজ তার প্রতিবেশী চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে প্রইভেট পড়াতেন। গত ৯ এপ্রিল ওই ছাত্রী স্কুলে এসে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এ সময় আমরা ঘটনা জানতে পারি।”
শিশুটির বরাতে প্রধান শিক্ষক বলেন, “মনোজ ওই ছাত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে গত নভেম্বর প্রথম ধর্ষণ করেন। এরপর মাঝেমধ্যেই ধর্ষণ করতেন। বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
“ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, একজন সদস্য, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির সামনে ওই ছাত্রী ধর্ষণের বর্ণনা দিয়েছে।”
পরে তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপতালে ভর্তি করার হলে সেখান থেকে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করতে তাকে হাসপতাল থেকে ‘সুকৌশলে’ অপহরণ করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন প্রধান শিক্ষক।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হাসান শেখের ভাই শাহজাহান শেখ শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসেন। এখন ওই শিশু ও তার পরিবারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”
শিশুর পরিবারকে খুঁজে না পাওয়ায় প্রশাসনের পরামর্শে তিনি মামলা করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর হাসপতালের সহকারী পরিচালক অসিৎ কুমার মল্লিক বলেন, “মামলায় বলা হয়েছে সুকৌশলে অপহরণ করা হয়েছে। শিশুটি হয়ত হাসপতালে ভর্তি ছিল। তার স্বজনরা তাকে রিলিজ করার অনুরোধ করে। সে অনুরোধে হয়ত তাকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমার জানানেই।
“আজ শুক্রবার অফিস বন্ধ। শনিবার অফিসে গিয়ে ফাইলপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই বকুল বলেন, “হাসপতাল থেকে ওই ছাত্রীকে কৌশলে শাহজাহানসহ তিন-চারজন অপহরণ করেন। এ কারণে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়নি। ধর্ষণের আলামত নষ্ট করতেই তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করছি।”
আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি মো. মনিরুল ইসলাম।
এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হাসান শেখের সহযোগিতায় আসামিরা পালিয়ে গেছেন।
তবে হাসান শেখ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “কে বা কারা অপহরণ করেছে তা আমার জানা নেই। আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আমি কাউকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করিনি।”