মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে রাস্তায় বাবা

একমাত্র মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে বুকে ফেস্টুন জড়িয়ে একা রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মফিজুল হক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2019, 04:20 PM
Updated : 10 April 2019, 06:26 PM

বুধবার দুপুর ১২টা থেকে দেড়ঘণ্টা তিনি এই কর্মসূচি পালন করেন। একই স্থানে এই কর্মসূচি নিয়ে বৃহস্পতিবার আবার আসবেন বলে জানান তিনি।

২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল জেলার আশুগঞ্জের চর চারতলা গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পরিত্যক্ত পানির ট্যাংক থেকে মফিজুল হকের মেয়ে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা কামরুন নাহার তূর্ণার (২৮) হাত-মুখ বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার একটি মেয়ে রয়েছে।

তুর্ণা হত্যার অভিযোগে তার বাবা মফিজুল হক তুর্ণার স্বামী আরিফুল হক রনির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার পর গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। 

এখন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ মফিজুলের।

মফিজুল বলেন, ২০১২ সালে রনির সঙ্গে তূর্ণার বিয়ে হয়। সম্পত্তির লোভে কিছুটা কৌশল আর কিছুটা জোর করে তূর্ণাকে বিয়ে করেন মফিজুল হকের আপন ছোট ভাইয়ের ছেলে রনি। তূর্ণার বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি পাশাপাশি।

তিনি জানান, 'খান বাহাদুর সরকার বাড়ি' নামে পরিচিত ওই বাড়ির মেয়ে তূর্ণা ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করে আশুগঞ্জের আর জে প্রভাতী কিন্ডারগার্টেন নামে একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তূর্ণার স্বামী রনি এসএসসির গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। সম্পর্কে তূর্ণা ও রনি চাচাতো ভাই-বোন। তূর্ণা তার বাবার একমাত্র সন্তান। বাবার বিপুল সম্পত্তির ৭৫ ভাগ তূর্ণার নামে দান করা।

বিভিন্ন সময় এই সম্পত্তির জন্য রনি তুর্ণাকে চাপ দিত বলে মামলায় মফিজুল অভিযোগ করেন।

তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল তূর্ণাকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে রনি আশুগঞ্জ বাজারে তার ধানের চাতালে চলে যায়। আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তূর্ণার খোঁজ পাচ্ছিলেন না মফিজুল।

ওইদিন সন্ধ্যায় বাড়ির পরিত্যক্ত পানির ট্যাংকের ভেতরে হাত বাঁধা, মুখে পলিথিন মোড়ানো ও গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তূর্ণার লাশ পাওয়া যায়।

মফিজুল হক বলেন, জামিনে মুক্তির পর রনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। পলাতক থাকার পরও বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে চলছে তার লোকজন।

“তূর্ণার নামে একটি সেবা ও শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান বানাতেও তার লোকজন বাধা দিচ্ছে। এতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই আমি।”