ক্রাইস্টচার্চে হামলা: সামাদের দাফন নিউজিল্যান্ডে

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলায় নিহত কুড়িগ্রামের ড. আব্দুস সামাদকে সেদেশেই দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পারিবারের সদস্যরা।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2019, 01:18 PM
Updated : 17 March 2019, 02:22 PM

রোববার স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির একটি কবরস্থানে তাকে সমাহিত করার কথা জানিয়েছেন সামাদের বড় ছেলে তোহা মোহাম্মদ।

তোহা মোহাম্মদ বলেন, শনিবার বিকালে তার মা ও ছোট ভাই নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছে তার বাবার মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ তার বাবার লাশ শনাক্ত করেছে।

“রোববার সকালে তারা লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে সেখানকার কর্তৃপক্ষ আমার পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছে।”

শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে গুলি চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যা করে বর্ণবাদী এক অস্ট্রেলীয় যুবক।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ওই হামলায় মোট চারজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যপক ড. আবদুস সামাদ ও হোসনে আরা আহমেদের পরিচয় নিউ জিল্যান্ডের পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

ড. সামাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাপশি একটি মসজিদে মোয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করতেন বলে পরিবার জানিয়েছে।

হামলার ঘটনার সময় একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন নিউ জিল্যান্ড সফরে থাকা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কয়েকজন সদস্য। অল্পের জন্য তারা প্রাণে বেঁচে যান।

ঢাকায় বসবাসরত সামাদের বড় ছেলে তোহা মোহাম্মদ বলেন, “আগামীকাল লাশ পাওয়ার পর নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির কবরস্থানেই  বাবাকে দাফন করা হবে। আমার মা ও ভাইয়েরা সেখানকার ফরমালিটিগুলো সম্পন্ন করবেন।”

তিনিও অচিরেই ভিসার কাজ সম্পন্ন করে নিউজিল্যান্ডে মা ও ভাইদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবেন বলে জানান।

নিহত ড. সামাদের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মধুরহাইল্যা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিন সরকারের ছেলে। ১০ ভাই-বোনের মধ্যে সামাদ সকলের বড়। কয়েক বছর ধরে দুই ছেলে তারেক মোহাম্মদ ও তানভির মোহাম্মদ এবং স্ত্রী কিশোয়ারা সুলতানাকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডে বসবাস করছিলেন। তার তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে তোহা মোহাম্মদ বাংলাদেশেই একটি বেসরকারি চাকরি করেন।

ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপনা ছেড়ে নিউজিল্যান্ড যান সামাদ এবং সেখানে ২০১৩ সাল থেকে লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর থেকে তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ নিউজিল্যান্ডেই স্থায়ীভবে বসবাস করছিলেন।