অস্ত্রোপচারের পর পেটে ব্যথা, বের হল গজ-ব্যান্ডেজ

ফরিদপুরে প্রথম অস্ত্রোপচারের ছয় মাস পরে আবার অস্ত্রোপচার করে এক রোগীর পেট থেকে গজ-ব্যান্ডেজ বের করেছেন চিকিৎসক।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2019, 09:00 AM
Updated : 16 March 2019, 11:33 AM

এর আগে ঢাকা, বরিশাল ও মাদারীপুরে অনেক চিকিৎককে দেখানো হলেও তারা ঘটনা ধরতে পারেননি বলে স্বজনদের অভিযোগ।

ফরিদপুরের শমরিতা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফজলুল হক শোভন জানান, সোফিয়া বেগম (৪০) নামে এই নারীর পেটে বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচার করে তারা এসব গজ-ব্যান্ডেজ পেয়েছেন।

সোফিয়া মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার চর ফতে বাহাদুর গ্রামের তোতা হাওলাদারের স্ত্রী। সন্তান জন্মের সময় অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে মাদারীপুরের নিরাময় ক্লিনিকের চিকিৎসক তার পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখে দেন বলে পরিবারের অভিযোগ।

সোফিয়ার স্বামী তোতা হাওলাদার বলেন, মাস ছয়েক আগে প্রসববেদনা নিয়ে নিরাময় ক্লিনিকে ভর্তি করান স্ত্রীকে।

“সেখানকার ডাক্তার রুনিয়া জরুরি সিজার করাতে বলেন। সিজার করলে মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু স্ত্রীর পেটব্যথা বাড়তে থাকে। এরপর অপারেশনের ক্ষত থেকে পুঁজ বের হতে থাকলে আবার ডাক্তার রুনিয়ার কাছে নিয়ে যাই। তখন তিনি পেটে টিউমারের কথা বলে আবার হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবু সুস্থ না হলে মাদারীপুরেই অপর এক গাইনি চিকিৎসককে দেখায় নিরাময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এর পরও স্ত্রী সুস্থ না হলে তাকে নিয়ে যাই ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে। এরপর বরিশাল হাসপাতালে। কিন্তু কোথাও কেউ স্ত্রীর রোগ ধরতে পারেনি। সুস্থও হয়নি।”

পরে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে যান ফরিদপুরের শমরিতা জেনারেল হাসপাতালে। এখানকার চিকিৎসক ফজলুল হক শোভন অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে গজ-ব্যান্ডেজ বের করেন।

চিকিৎসক শোভন বলেন, “রোগীকে যখন আনা হয় তখন তার পেট থেকে পুঁজ আর বিকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। ছয় মাস আগে রোগীর সিজার করা হয়েছিল মাদারীপুরের নিরাময় ক্লিনিকে। পরে আবার সেলাই ওপেন করা হয়েছিল। ওরা নাকি বলেছিল পেটে টিউমার আছে। কিন্ত আমরা টিউমারজাতীয় কিছু পাইনি।

“পরে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিই। পেটের ভেতর থেকে বড় একটি মব (অপারেশনের সময় ব্যাবহৃত গজ-ব্যান্ডেজ) বের করেছি।”

রোগীর অবস্থা এখন ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ জানিয়ে তিনি বলেন, অন্তত তিন দিন না যাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না।

সোফিয়ার ভাগ্নে আবুল হোসেন বলেন, “খালা বাঁচবেন কিনা তা তো জানি না। এখন আমরা ওই চিকিৎসকের বিচার চাই যাতে এমন যন্ত্রণায় আর কাউকে ভুগতে না হয়।”

এদিকে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সোফিয়ার স্বামী তোতা হাওলাদার।