ঠাকুরগাঁওয়ে ‘নিপার’ লক্ষণ নিয়ে আরও ৩ জন হাসপাতালে

নিপা ভাইরাসে পাঁচজনের মৃত্যুর একমাস পর ‘একই’ লক্ষণ নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় আবার এক পরিবারের তিনজন অসুস্থ হয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিশাকিল আহমেদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2019, 04:13 PM
Updated : 14 March 2019, 04:13 PM

বৃহস্পতিবার বড়পলাশবাড়ি ইউনিয়নের উজরমনি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এবিএম মনিরুজ্জামান।

অসুস্থরা হলেন উজরমনি গ্রামের নাসিরুল ইসলামের স্ত্রী দুলালী বেগম (২৮), তার ছেলে সিয়াম (৮) ও মেয়ে নিতু (৪)।

তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গত ৯ ফেরুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রামে আবু তাহের (৫৫), তার জামাতা হাবিবুর রহমান (৩৫), স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫), দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসানের (২৭) অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

পরে এ রোগের জন্য নিপা ভাইরাস দায়ী বলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) নিশ্চিত করে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এবিএম মনিরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে গৃহবধূ দুলালী বেগম, তার ছেলে সিয়াম ও মেয়ে নিতু হাসপাতালে আসেন।

“তাদের তিনজনের জর, মাথা ব্যাথা, শরীরে দুর্বলতার লক্ষণ পাওয়া যায়। বমিও করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।”

মনিরুজ্জামান আরও জানান, সদর হাসপাতালে তাদের তিনজনের শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মনিরুজ্জামান বলেন, এই উপজেলায় একমাস আগে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

“গবেষক দল তদন্ত শেষে জানিয়েছিলেন তাদের শরীরে নিপা ভাইরাস পাওয়া গেছে। এখন আবার একই পরিবারের তিনজন অসুস্থ হয়েছেন এবং তাদের শরীরেও নিপা ভাইরাসের লক্ষণগুলো দেখা যাচ্ছে।”

অসুস্থ দুলালী বেগমের স্বামী নাসিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত রাতে এক প্রতিবেশী তার স্ত্রীকে কিছু কুল দেন। ওই কুল তার স্ত্রী ও দুই সন্তান খান।

“সকাল থেকে তারা বমি করতে থাকেন এবং জর, মাথা ব্যাথা ও শরীরে দুর্বলতা অনুভব করেন।”

বড়পলাশবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কিছুদিন আগেও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল; এরপর থেকে মানুষজন আতঙ্কে রয়েছে।

“এখন আবার আমার ইউনিয়নের একই পরিবারের তিনজন অসুস্থ হয়েছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রোগটি নির্ণয় করার দাবি জানাচ্ছি।”

ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন আবু মো. খয়রুল কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অজ্ঞাত রোগে অসুস্থ তিনজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলাদাভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

“তারা কী কারণে অসুস্থ হয়েছে আমরা তা নির্ণয় করার চেষ্টা করছি।”

এলাকার মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে মাস্ক পরার পরামর্শ দেন তিনি।