‘শেখের বেটি আংগোরে ঘর দিছে’

শেখের বেটি আংগোরে ঘর দিছে আমরা হেরে দোয়া দিয়াম।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2019, 12:49 PM
Updated : 13 March 2019, 12:55 PM

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার অভিরামপু গ্রামের দরিদ্র শহিনুর বেগম সরকারের দেওয়া ঘর পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে কথাগুলো বলেন।

বুধবার সরেজমিনে চন্ডিপুর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে গিয়ে দরিদ্র এই নারীর সঙ্গে কথা হয়।

আবেগাপ্লুত শাহিনুর বলেন, “দশ বছর ধরি একখান ঘর কইত্তে হারিন। তুফান আইলে ঘর উড়াই লই যায় কিনা হেই ডরে ঘুম আইত না। মেঘ আইলে হানি হরে, শীতকালে ঠাণ্ডায় খুব কষ্ট হাই। ওন আংগোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর বানাই দিছে, লেপটিনও করি দিছে, খুব ভালা ওইছে, এখন আঁডা খুশি। শেখের বেটি আংগোরে ঘর দিছে আমরা হেরে দোয়া দিয়াম।”

প্রধানমন্ত্রীর দরিদ্র বান্ধব কর্মসূচির আওতায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় ৪৮০ পরিবার ঘর পেয়েছে। ঘর পেয়ে এসব দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেছেন।

সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে ‘জমি আছে, ঘর নাই তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ’ আশ্রয়ন-২ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে সারা দেশে। এ পর্যায়ে রামগঞ্জে ৪৮০ পরিবার ঘর পেয়েছে।

রামগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪৮০টি আধাপাকা ঘর বরাদ্দ আসে। প্রতিটি ঘর ও শৌচাগার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় এক লাখ টাকা। এই প্রকল্প বস্তবায়নের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘর নির্মাণ করে সম্প্রতি গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করে।

অভিরামপুর একই গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা মাহফুজা শ্রবণ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। বাবার বাড়িতে ঠাঁই না পেয়ে ৩০ বছর যাবত বোনের বাড়িতে সামান্য জায়গায় পাতার ছাউনির একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন।

বিনামূল্যে ঘর পেয়ে তিনি খুব খুশি, যাকে পান তাকে ঘরটি দেখিয়ে শুধু বলেন, “হাসিনারে আল্লায় বাঁচাই রাখুখ।”

নিচহরা গ্রামের দিনমজুর বিল্লাল হোসেন বলেন, “অনেকদিন থেকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে থাকতে খুব সমস্যায় ছিলাম, মনে মনে একটি ঘর করার স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু অভাবে সেটি হয়নি। এখন শেখ হাসিনা গরীবের দুঃখ বুঝে সুন্দর একটি ঘর দেওয়ায় মাথা গোঁজার জাগা পাইছি।”

ঘর পেয়ে খুশি নন্দনপুর গ্রামের গ্রামের রিকশাচালক আমির হোসেন, ভোলাকোট গ্রামের বিধবা রৌশনারা বেগম, অভিরামপুর গ্রামের কবিতা কংশ বনিক, টামটা গ্রামের প্রতিবন্ধী সফিকসহ উপজেলার বহু দুস্থ ও অসহায় পরিবারের সদস্য।

ঘর বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ভাদুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘যার জমি আছে ঘর নাই তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রকল্পের আওতায় ৪৮০ অসহায় পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সুন্দর ও টেকসই ঘর পেয়ে সবাই উচ্ছ্বসিত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করছেন, বলেন তিনি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, সরকারি বিধি মোতাবেক যথাযথভাবে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হয়। ১৫ ফুট দৈর্ঘের এসব ঘরের মেঝে পাকা, সামনে খোলা বারান্দা আরসিসি পিলার, উন্নত টিনের বেড়ার ছাউনিতে ঘেরা। এর সঙ্গে একটু দূরে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা রয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান  আ ক ম রুহুল আমিন বলেন, গত বছর এপ্রিলে শুরু করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৪৮০টি পরিবারকে তালিকা অনুযায়ী ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।