ঠাকুরগাঁওয়ে যুবককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

ঠাকুরগাঁও শহরের কোট চত্বর থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিশাকিল আহমেদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2019, 05:55 PM
Updated : 4 March 2019, 04:46 AM

রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন ওই যুবকের স্ত্রী আঞ্জু পারভিন।

মো. আকাশ (৩৩) নামের যুবকটি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জগথা এমপিপাড়া মহল্লার প্রয়াত মোবারক হোসেনের ছেলে।

আঞ্জু পারভিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি একটি মাদক মামলায় তার স্বামী আকাশ এবং তার ভাই হামিদুর রহমান ঠাকুরগাঁও জজ কোর্টে হাজিরা দিতে আসেন।

“হাজিরা শেষে বাড়ি ফেরার সময় কোর্ট চত্বর থেকে সদর থানার এসআই আনিস, এসআই ভুষণ, কনেস্টবল তসলিমসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আমার স্বামী আকাশ ও তার ছোট ভাই হামিদুরকে তুলে থানায় নিয়ে যান।”  

আঞ্জুর অভিযোগ, “ওই রাতেই থানা থেকে ফোন (নম্বর ০১৭৭৩৭৫৭১৪৩) করে জানানো হয় আমার স্বামী আকাশ আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। পরদিন (১ মার্চ) সকালে আমার দেবর মানে আকাশের ছোট ভাই জাহিদুলসহ তার বন্ধুরা থানায় গিয়ে আমার স্বামী আকাশ ও তার ভাই হামিদুরের সঙ্গে দেখা করেন এবং খাবার দিয়ে আসেন।”

আঞ্জু পারভিন বলেন, “১ মার্চ রাত আনুমানিক ১১টার দিকে আরেকটি মোবাইল থেকে (নম্বর ০১৭৩৭২২৯৮২৮) আবার আমাকে ফোন দিয়ে আবার থানায় যেতে বলা হয়।

“পরদিন ২ মার্চ আমার দুই সন্তানকে নিয়ে আমি থানায় আমার স্বামী আকাশ ও আমার স্বামীর বড় ভাই হামিদুরের সঙ্গে দেখা করার জন্য থানায় উপস্থিত হই; এরপর থানায় দেখতে পাই শুধুমাত্র আমার স্বামীর ভাইকে; আর আমার স্বামী থানায় নেই।”

তিনি বলেন, “স্বামীর ভাই হামিদুর জানায় ১ মার্চ রাত আনুমানিক ১২টার দিকে আমার স্বামীকে পুলিশ কোথায় যেন নিয়ে গেছে। এরপর থেকে আমি বারবার থানায় গিয়ে আমার স্বামীর খোঁজ নিতে চাইলে পুলিশ সদস্যরা আমাকে জানায় আমার স্বামীকে তারা আটক করে নাই।”

আঞ্জু পারভিন অভিযোগ করেন, এখন মোবাইল ফোন (০১৭৩৭২২৯৮২৮) তাকে বার বার ফোন করে বলা হচ্ছে টাকা নিয়ে দেখা করার জন্য; টাকা দিলে তারা তার স্বামীকে ফেরৎ দিবে।

“জনসম্মুখে কোর্ট চত্বর থেকে পুলিশ আমার স্বামী আকাশকে তুলে নিয়ে যায়; আর এখন তারাই বলছে তারা তাকে আটক করেনি। আমি আমার স্বামীকে ফেরৎ চাই।”

০১৭৭৩৭৫৭১৪৩ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সদর থানার এসআই আক্তারুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোর্ট চত্বরে নয়, বালিয়াডাঙ্গী মোড় থেকে শুধু হামিদুরকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া আকাশ নামে কাউকে আটক করা হয়নি।

এসআই আনিসুরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তবে এসআই ভূষণ চন্দ্রের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হামিদুরকে মাদক মামলা দেওয়া হয়েছে; আর মামলার বাদী আনিসুর স্যার; আমি শুধু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা; গ্রেপ্তার এবং যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে উনি ভালোই জানেন।”

এ বিষয়ে সদর থানার ওসি আশিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা হামিদুর নামে একজনকে বালিয়াডাঙ্গী মোড় থেকে ফেন্সিডিলসহ আটক করার পর তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্য কাউকে আটক করা হয়নি।”

সংবাদ সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।