ইলিশ রক্ষা: চাঁদপুর ও ভোলায় ২ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ

ইলিশ রক্ষায় পদ্মা, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর নির্দিষ্ট এলাকায় দুই মাস সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

ভোলা প্রতিনিধিচাঁদপুর ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2019, 03:04 PM
Updated : 28 Feb 2019, 03:55 PM

প্রতিবছরের মতো এবারও আগামী ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, দুই মাসের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বুধবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে টাস্কফোর্স কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা মৎস্য অফিস জানায়, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড, জেলা মৎস্য বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রনিধিরা এই কমিটিতে রয়েছেন।

জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়, জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকা অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে।

অভয়াশ্রম চলাকালে ইলিশসহ যেকোনো মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ ও সরবরাহ নিষিদ্ধ থাকবে বলে মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বলেন, ২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের বিস্তীর্ণ নদীসীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

জেলায় ৫১ হাজার তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে। এসব জেলেদের মাছধরা-নিষিদ্ধ সময়ে ৪০ কেজি করে ৪ মাস চাল দেওয়া হবে।

জেলেদেরকে জাটকাসহ সকল ধরনের মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য ইতোমধ্যে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। নদী উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করা, জেলে পাড়ায় লিফলেট বিতরণ ও আড়ৎগুলোতে ব্যনার সাঁটনো হয়েছে।

তিনি জানান, আইন অমান্য করে কোনো জেলে জাটকা নিধন করলে তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার জেলে ইসমাইল, কাশেম ও মানিক বলেন, মেঘনায় নিষিদ্ধ সময়ে যেই পরিমাণ চাল দেওয়া হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। তাই নিষিদ্ধ সময়ে চালের পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থান কিংবা আর্থিক সহায়তা দেওয়া উচিত।

সভায় জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান আইন অমান্যকারী জেলেদের তালিকা করতে জেলা মৎস্য বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন।

চাঁদপুর কান্ট্রি ফিশিং বোর্ড মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক বলেন, মেঘনা নদীতে যেসব জেলে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

ভোলা প্রতিনিধি জানান, ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ১ মার্চ  থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

ছবি: ভোলা প্রতিনিধি

১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ইলিশা থেকে চরপিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটর এবং তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তুম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে বলে মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে।

মৎস্য বিভাগ জানায়, এ দুই মাস ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ডিম ছাড়ে; আর তাই ১৯০ কিলোমিটার এলাকা মাছের আভায়াশ্রম। মাছের ডিম ছাড়ার প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন করতে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম বলেন, জেলেরা যাতে ইলিশ শিকার না করে সে জন্য প্রচার-প্রচারণা ও সচেতনা সভা করা হয়েছে।

২৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার পর থেকেই ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ বলে তিনি জানান।