বৃহস্পতিবার উপজেলার কাচঁপুর ইউনিয়নের ললাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহত লাল মিয়া ললাটি এলাকার বাসিন্দা।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির জানান, ললাটি এলাকার ১৯ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে আব্দুস সামাদ ও একই এলাকার মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে খোরশেদ ও মাজহারুলের সাথে র্দীঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। জমিটি প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে খোরশেদ ও মাজহারুল ইসলাম ভোগ দখল করে আসছেন। জমি দখলে নিতে না পেরে সম্প্রতি আব্দুস সামাদ মদনপুরের আনোয়ার হোসেনের কাছে বিক্রি করে দেন।
এলাকাবাসী জানান, রাজধানীর কোতোয়ালি থানার একটি মামলায় বুধবার রাতে খোরশেদ, মাজহারুলসহ ওই বাড়ির কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
এলাকাবাসীর বরাতে ওসি বলেন, এই অবস্থায় ললাটির স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় আনোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুরে মদনপুর, ফুলহর ও দেওয়ানবাগ এলাকা থেকে ৩০-৪০ জনের সন্ত্রাসী নিয়ে জায়গাটি দখল করতে যায়। তারা ওই বাড়ির সামনে দুটি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং একটি ঘর ভাংচুর করে জায়গাটি দখল নেয়ার চেষ্টা করে।
ওসি বলেন, এ সময় স্থানীয় লাল মিয়া আনোয়ার হোসেনকে বাড়িঘর ভাংচুর করতে নিষেধ করে বলেন, জোরপূর্বক সাইনবোর্ড না টানিয়ে জমির বৈধ কাগজপত্র নিয়ে দুই পক্ষ বসে দখলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বলেন।
ওসি বলেন, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা লাল মিয়াকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মদনপুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় তারা ওই হামলাকারীদের ফেলে যাওয়া একটি জিপ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
নিহত লাল মিয়ার বড় ছেলে মোক্তার হোসেন বলেন, “আমার বাবার সাথে জমি নিয়ে কোনো বিরোধ ছিল না। সন্ত্রাসীরা জমি দখল নিতে এসে বাড়িঘর ভাংচুর করছিল। তিনি তাদের সন্ত্রাসী কর্যাকলাপ না করার জন্য অনুরোধ করলে তারা আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।”
সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুস সামাদ ও তার ছেলে ইমরান হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) খোরশেদ আলম বলেন, জেলার পুলিশ সুপার নির্দেশে পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে।
“যে গাড়িটি উত্তেজিত জনতা পুড়িয়ে দিয়েছে সেই গাড়িটির মালিক ফুলহরের সন্ত্রাসী হাবিবের বলে আমারা জানতে পেরেছি। হাবিব বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে কাজ করে।”
তাকেসহ এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে খোরশেদ জানান।