চকবাজারে আগুন: চাঁদপুরের আবু বকরের স্বজনদের মাতম

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুর খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাঁদপুরের আবু বকর ছিদ্দিকের স্বজনরা।

আল ইমরান শোভন চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2019, 02:38 PM
Updated : 21 Feb 2019, 02:38 PM

রাজধানীর চকবাজারে বুধবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আবু বকর ছিদ্দিকের মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের কাছে খবর এসেছে।

আবু বকর ছিদ্দিক চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্বপুর উত্তর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কিছুক্ষণ আগে আবু বকর মায়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন।

“মা আমি ব্যস্ত আছি, একটু পড়ে কথা বলব,” এটাই ছিল আবু বকর ছিদ্দিকের শেষ কথা।

বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকার কয়েকটি ভবনে লাগা আগুন সকালে নেভানোর পর ৭০টি লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।

তবে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ ৬৭টি লাশ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৩৭টি মরদেহ শনাক্ত এবং ২২টি পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে আবু বকরের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের শোকের মাতমে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের পরিবেশ। কোনো সান্ত্বনা তাদের আহাজারি থামাতে পারছে না।

তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে ছিল আবু বকর ছিদ্দিক ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান। ভাইদের মধ্যে বড়।

আবুল হোসেন বলেন, দুই বছর আগে জীবিকার সন্ধানে পাশের বাড়ির জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে রাজধানীর চকবাজারে যান আবু বকর।

“রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে আমরা চিন্তায় পড়ে যাই। পরে শুনতে পারছি সে আগুনে পুড়ে মারা গেছে এবং ঢাকায় অবস্থানরত পরিবারের লোকজন তার মৃতদেহ শনাক্ত করেছে।”

পুরো সংসার আবু বকরের উপর নির্ভরশীল ছিল। মাসে এ সংসারে ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ ছিল, যা আবু বকর করতেন বলে জানান তার বাবা আবুল হোসেন।

আবু বকরের বড়বোন হালিমা বলেন, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে তার কাছে ফোন করেছিলেন আবু বকর। জানতে চেয়েছিলেন আদরের ভাগিনার (হালিমার ছেলে) কথা।

“এরপর মাকে বলেছে- আমি একটু ব্যস্ত আছি মা, একটু পরে কথা বলব।”

বড়বোন হালিমার বিয়ে হয়েছে। ছোট ভাই জিলানী ও ওসমান গনি বেকার। ছোটবোন আমেনা এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

ছোট বোন আমেনার সঙ্গে দুই দিন আগে ফোনে কথা হয়। তাকে বলেছিলেন, “তোকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন, ভালো করে পরীক্ষা দিবি।”