চকবাজারে অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসা খরচ দেবে সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ঢাকার চকবাজারে অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসা খরচ সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2019, 09:12 AM
Updated : 21 Feb 2019, 09:12 AM

বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, “অগ্নিদগ্ধদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা  আছে। ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েকটি হাসপাতালকে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “নিমতলির ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে চকবাজারের এ ঘটনা।”

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়াসী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন উপস্থিত মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার চকবাজারে চুড়িহাট্টার ওয়াহিদ চেয়ারম্যানের চারতলা ভবনটিতে প্রথমে আগুন লাগে, এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি, পেছনের একটি এবং সরু গলির বিপরীত পাশের দুটি ভবনে।

এতে কমপক্ষে ৬৭ জন নিহত হন।ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বলেছেন, তারা ৬৭টি লাশ পেয়েছেন।

আর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক তারেক হাসান ভূইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের হিসাবে লাশ ৭০টি। তবে কয়েকটা ব্যাগে খণ্ড খণ্ড ডেডবডি ছিল। সম্পূর্ণ ডেডবডি হয়ত ৬৭টি হতে পারে।

নিহতদের অনেকের দেহ এতই পুড়েছে যে শনাক্ত করার অবস্থা নেই।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, আগুন লাগার পরপরই চার তলা ভবনটির সামনে থাকা বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ ঘটে; ওই সময় রাস্তায় থাকা কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরে যায়।

অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর ১০টি ইউনিট সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিটের সংখ্যা ৩৭টিতে গিয়ে ঠেকে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলিয়ে কর্মীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২০০ জন।

এর বাইরে পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি হেলিকপ্টার নিয়ে বিমানবাহিনীও যোগ দেয় আগুন নেভানোর কাজে।

পুরান ঢাকার ওই সংকীর্ণ সড়কে ভবনগুলোর ছোট ছোট কক্ষে আগুন জ্বলতে থাকায় তো নেভাতে বেগ পেতে হয় বলে জানান অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর মহাপরিচালক আলী আহাম্মেদ খান।

ভোররাতে একবার আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনার পরও আবার তা ছড়িয়ে পড়েছিল।

সকাল ৯টার দিকে আগুন আয়ত্তে আনার কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক শাকিল নেওয়াজ। তখন ভবনের ভেতরে ঢুকে একের পর এক লাশ বের করে আনছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা; সেখানে একটি তথ্য কেন্দ্র খুলে বোর্ডে সর্বশেষ তথ্যও জানিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।

দুপুর পৌনে ১টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভেছে বলে ঘোষণা আসে ফায়ার সার্ভিসের; তার আধা ঘণ্টা পর উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন মেয়র খোকন।

এই অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন বহু; ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অন্তত ৪০ জন।

আগুনে চকবাজার চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশের অন্তত পাঁচটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনে বিভিন্ন দোকানের পাশাপাশি ছিল রাসায়নিক, প্লাস্টিক ও প্রসাধন সামগ্রীর গুদাম।

দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়ায় বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

নয় বছর আগে নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের পর পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদামগুলো সরানোর দাবি উঠেছিল জোরেশোরে, কিন্তু তা না হওয়ার মধ্যে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ড ঘটল।