বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানবন্ধনের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তালুকদার মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করার দাবি করেন।
মানববন্ধনে ইংরেজি বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় প্রধান বরাবর এক অভিযোগে বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় একাডেমিক ভবন-ই-এর ৪১৯ নম্বর কক্ষে নাচের অনুশীলন করছিলেন তারা।
“ওইদিন অনুশীলন কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক মিসবাহ মেয়েদের উদ্দেশে বলেন- রমণীরা আপনারা নাচেন আমি দেখি। আজ পকেট খুব গরম। পকেট থেকে টাকা বের করে তিনি বলেন- আজ আপনাদের নাচের প্রতিটি মুদ্রায় একটা করে মুদ্র্রা উড়াব আমি।”
শিক্ষার্থীদের করা এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায়।
তবে বিভাগের দেওয়া এই শাস্তিতে সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নওশীন বলেন, “আমরা এই শিক্ষকের বহিষ্কার চাই। এর আগেও তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অনেক অভিযোগ ছিল। আমরা এবারই প্রথম রাস্তায় দাঁড়ালাম। এই ধরনের শিক্ষকের কোনো প্রয়োজন নেই আমাদের।”
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি মহিবুর রহমান মুহিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের বিভাগের মোট ছয়টি ব্যাচের মধ্যে চারটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের ক্লাস বর্জন করেছে। আগেও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল।”
তিনি বলেন, “আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই যাতে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোনো শিক্ষক যৌন হয়রানির মতো ঘটনা ঘটাতে না পারেন।”
তিনি বলেন, “আমি ঘটনাটি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক। লিখিত অভিযোগ পেলে ওই শিক্ষকদের শাস্তির জন্য আমরা সুপারিশ করব।”
এ বিষয়ে জানার জন্য ওই শিক্ষক তালুকদার মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি শুনেছি, রিহার্সাল অনুষ্ঠানে ওই শিক্ষকের কোনো কথায় শিক্ষার্থীরা অসন্তুষ্ট। তবে এটা তারা বিভাগের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে সমাধান করতে পারত। সেখানে সমাধান না হলে পর্যায়ক্রমে প্রক্টর, ভিসির কাছে যেতে পারত। এভাবে রাস্তায় নামা ঠিক না।”
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভাগীয় কমিটির সিদ্ধান্তে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। একটি সেমিস্টারের ক্লাস সে নিতে পারবে না। তারপরও অতি উৎসাহী একটি গ্রুপ এটাকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে।”
তিনি বলেন, “ ওই শিক্ষক যেটা করেছেন তা ঠিক নয়। তার আরও সংযত হওয়ার দরকার ছিল, শালীন হওয়ার দরকার ছিল। আমরা তদন্ত করে বিষয়টি দেখব। তাকে সাবধান করব, সতর্ক করব।”