‘পুলিশের ধাওয়া খেয়ে শীতলক্ষ্যায় নিখোঁজ’ যুবকের লাশ উদ্ধার

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় চারদিন আগে নিখোঁজ এক যুবকের লাশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে; যিনি পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন বলে পরিবারের অভিযোগ।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2019, 09:44 AM
Updated : 20 Feb 2019, 09:59 AM

মৃত রিয়াদ সিকদার (৩০) কালীগঞ্জ পৌর এলাকার মূলগাঁও (চরপাড়া) গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান সিকদারের ছেলে। তিনি এলাকায় মাটি ব্যবসা করতেন।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আবুবকর মিয়া জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভার মূলগাঁও এলাকার পাশের ফুলেশ্বরী খেয়াঘাট থেকে লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এদিকে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে রিয়াদ শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিখোঁজ হয় বলে তার পরিবার থেকে অভিযোগ করা হলেও পুলিশ বলছে, বিষয়টি তাদের জানা নেই।     

নিহতের ভাই রিফাত সিকদার জানান, মূলগাঁও এলাকায় তাদের জমির পাশে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর থেকে তার ভাই রিয়াদ সপ্তাহ খানেক আগে থেকে মাটি বিক্রি করছিলেন।

রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রিয়াদ ও তাদের তিন আত্মীয় দুলাল, রূপম ও আইয়ুব শ্রমিকদের মাটিকাটা তদারকি করতে যান। এক পর্যায়ে কালীগঞ্জ থানার এসআই রেজাউল করিমসহ পুলিশ তাদের ধাওয়া করে।

“এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও পাঁচ মাটিকাটা শ্রমিককে আটক করা হয়। এ সময় রিয়াদ শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ  দিয়ে নিখোঁজ হয়। দীর্ঘসময়ও রিয়াদের কোনো খোঁজ না পেয়ে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। এ ঘটনায় রিয়াদের শাশুড়ি পারভিন আক্তার থানায় জিডি করেন।”

রিফাতের অভিযোগ, “পুলিশ জিডি থেকে ‘পুলিশের ধাওয়া কথাটি বাদ’ দিয়ে জিডিটি লিখতে বাধ্য করে।”

এরপর ফায়ার সার্ভিস এর ডুবুরিদল ও স্থানীয়রা নদীতে তল্লাশি চালালেও রিয়াদের কোন সন্ধান মিলছিল না। সকালে এলাকাবাসী তার ভাইয়ের লাশ দেখে থানায় খবর দিলে খবর দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে বলে জানান রিফাত।

ওসি আবুবকর বলছেন, ঘটনার দিন পুলিশের ধাওয়া খেয়ে রিয়াদ নদীর পানিতে ঝাঁপ দেওয়ার পর থেকে নিঁখোজ থাকার বিষয়টি জানা তাদের জানা ছিল না। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে রোববার ও সোমবার নদীতে তল্লাশি চালিয়েও কোনো হদিস মেলেনি; পরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়েই তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

রিয়াদের নিখোঁজের বিষয়ে থানায় যে জিডি কর হয়, তার প্রায় আধাঘন্টা পর এসআই রেজাউল করিম বাদী হয়ে সরকারি জমি থেকে মাটি চুরির অভিযোগে রিয়াদসহ ১২ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছিলেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে ‘পুলিশের ধাওয়া কথাটি বাদ’ দিয়ে জিডি লিখতে বাধ্য করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি, রিয়াদের পরিবার যেভাবে বলেছে, জিডিতে তাই লেখা হয়েছে।”