রোববার জোহরের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে তাকে মৌড়াইল কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বাংলা একাডেমি ও জাতীয় প্রেসক্লাবে কবির মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার ভক্ত, অনুরাগীরা। ঢাকায় দুই দফা জানাজা শেষে শনিবার রাতে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ব্রাক্ষণবাড়িয়ার পৈতৃক ভিটায়, মৌড়াইল গ্রামের মোল্লাবাড়িতে।
কবির পারিবারিক বন্ধু আবিদ আজম জানান, রোববার সকালে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আল মাহমুদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে বেলা ১১টায় নিয়াজ মোহাম্মদ স্কুল মাঠে কবির কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সেখানে কবির স্মরণে তার কবিতা পাঠ করা হয়।
জানাজার আগে কবি মহিবুর রহিমের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন কবির ছেলে মীর মোহাম্মদ মনির, ভাষা সৈনিক মোহাম্মদ মুসা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি খ ম রশিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সভাপতি ও আল মাহমুদের মামা হাফিজুর রহমান মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন।
১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামে মীর আবদুর রব ও রওশন আরার ঘরে আল মাহমুদের জন্ম। পৈত্রিক নাম ছিল মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ, কিন্তু কবি হিসেবে আল মাহমুদ নামে পরিচিত হওয়ার পর ঢাকা পড়ে যায় তার পুরো নামটি।
দীর্ঘকাল সাংবাদিকতায় যুক্ত আল মাহমুদ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর জাসদের মুখপত্র গণকণ্ঠের সম্পাদক হয়েছিলেন। ওই সময় গ্রেপ্তার হয়ে আল মাহমুদকে কারাগারে যেতে হলেও ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই আবার তাকে শিল্পকলা একাডেমিতে সহপরিচালক পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
বাম ঝোঁক থেকে পরে বিপরীতে চলে স্বাধীনতাবিরোধীদের দলের অনুষ্ঠানে আল মাহমুদের অংশগ্রহণ অনেককে হতাশ করেছে। তবে পঞ্চাশের দশকে বাংলা কবিতার বাঁকবদলে তার অবদানের কথাও গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করেন সাহিত্য অঙ্গনের প্রতিনিধিরা।
কবিতা ছাড়াও তার কলম দিয়ে এসেছে ডাহুকী, কবি ও কোলাহর, নিশিন্দা নারীর মত উপন্যাস। তার গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে পানকৌড়ির রক্ত, সৌরভের কাছে পরাজিত ও গন্ধবণিক ।