হেলিকপ্টারে চড়ে বিশ্ব ইজতেমায় আহমদ শফী

নেতৃত্বের কোন্দলে দ্বিধাবিভক্ত তাবলিগ জামাতের দেওবন্দপন্থিদের ইজতেমায় অংশ নিতে হেলিকপ্টারে চড়ে চট্টগ্রাম থেকে টঙ্গী এসেছেন হেফাজত ইসলামের আমির আহমদ শফী।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2019, 03:27 PM
Updated : 17 Feb 2019, 06:11 AM

হাটহাজারি দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার পরিচালক শফী শুক্রবার দুপুরের আগে একটি বেসরকারি কোম্পানির হেলিকপ্টারে করে টঙ্গীর বাটা শু কারখানা এলাকায় নামেন।

পরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নিজের গাড়িতে করে তাকে ইজতেমা মাঠে বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্ধারিত তাঁবুতে নিয়ে যান। 

দুপুরে ইজতেমা মাঠে জুমার নামাজেও শরিক হন ৯৯ বছর বয়সী শফী, যাকে গত কয়েক বছরে টঙ্গী এসে ইজতেমায় অংশ নিতে দেখা যায়নি।  

হেফাজতে ইসলামের গাজীপুর জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা ফজলুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দাওয়াতি কাজে আলেম সমাজের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে অসুস্থ শরীর নিয়েই তিনি এই জমায়েতে হাজির হয়েছেন।”

শনিবার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়ে আহমদ শফী চট্টগ্রামে ফিরে যাবেন বলে ফজলুল হক জানান।

প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন হলেও তাবলিগ জামাতের নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে এবার তা পিছিয়ে যায়।

তাবলিগ জামাতের নেতৃত্ব তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াছের নাতি দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির হাতে থাকবে, না দেওবন্দ মাদ্রাসার মাওলানা জুবায়েরের ছেলে জুহাইরুল হাসানের অনুসারীরা এ সংঘের নেতৃত্ব দেবেন তা নিয়ে এই বিভক্তি।

গতবছর বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করতে ঢাকায় এসে বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সাদ। পরে সরকারে মধ্যস্থতায় ইজতেমায় অংশ না নিয়েই তাকে ঢাকা ছাড়তে হয়।

সাদপন্থিরা সে সময় তাবলিগের বিভক্তিতে উসকানি দেওয়ার এবং মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশু কিশোরদের রাস্তায় নামানোর অভিযোগ করেছিল আহমদ শফীর হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে।

এ বছর তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষ জানুয়ারির দুটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিশ্ব ইজতেমা করার ঘোষণা দিলে সেই উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। ইজতেমা মাঠে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুও হয়।

এরপর গত ২৪ জানুয়ারি ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তাবলিগের দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এবারের ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করেন। দুই পক্ষের মতের মিল না হওয়ায় আয়োজনেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়।

ইজতেমার চার দিনের আয়োজনের মধ্যে দুই পক্ষের জন্য দুদিন করে রেখে দুই দফা আখেরি মোনাজাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবার।

এর মধ্যে শুক্র ও শনিবার চলছে দেওবন্দপন্থিদের ইজতেমা। আর দিল্লির সাদপন্থীদের ইজতেমা হবে রবি ও সোমবার। দুই পক্ষ শনি ও সোমবার দুইবার আখেরি মোনাজাত করবে।