রাস্তার ওপর দিয়ে ইউএনওর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

নিরাপত্তার কথা বলে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

জামালপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2019, 09:58 AM
Updated : 14 Feb 2019, 09:58 AM

এতে দুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ায় বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এলাকাবাসী।

দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহ অভিযোগ করেন, “ইউএনও মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা পৌর কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অন্যায়ভাবে শত বছরে পুরনো সড়কটি বন্ধ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন।

“জনস্বার্থে রাস্তাটি বন্ধ না করার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হলেও তিনি তা মানেননি। সীমানা প্রাচীর নির্মাণে শত বছরের পুরনো পাকা রাস্তাটি বন্ধ করেছেন। এতে স্থানীয় অন্তত ১৫টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে রহস্যজনক কারণে সাধারণ মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছেন ইউএনও। রাস্তাটি অবিলম্বে উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

সড়কটি উন্নয়নের কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পৌর কর্তৃপক্ষের অধীনে জনস্বার্থে জাইকার অর্থায়নে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে এই নির্মাণকাজ চলছে।”

প্রাচীর নির্মাণের প্রতিবাদে বুধবার বিকালে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজিদুল হক বলেন, ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী, মলমগঞ্জ, শ্বশারিয়াবাড়ি, মোরাদাবাদ ও দেওয়ানগঞ্জের চরভবশুর, বরখাল, ফুটানিবাজার, চিকাজানি ও চুনিয়াপাড়া এলাকার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ স্বাধীনতার আগে থেকেই এই সড়কে যাতায়াত করছে।

“ওই সব এলাকার মানুষ এই সড়ক দিয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, এ কে এম কলেজ, দেওয়ানগঞ্জ বাজার, রেলস্টেশন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতায়াত করে। আরওআর এবং বিআরএস রেকর্ডভুক্ত এই সড়কটি সম্প্রতি অন্যায়ভাবে সীমানা প্রাচীর দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে।”

যাতায়াতে দুর্ভোগের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ এলাকার ‘কয়েকশ পরিবার’ নিরাপত্তা ঝুকিতে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন পৌর কাউন্সিলর নুরে আলম সিদ্দিকী জুয়েল।

পরিষদ চত্বর এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক রাশেদা ফেরদৌসি বলেন, “আমরা এই এলাকার প্রায় ৫০০ পরিবার ওই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করছি।

“সরকারি ম্যাপের এই রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় নিজ বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে দেওয়ানগঞ্জ থানা, বাজার, নিজ বাড়ী সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ ও হাসপাতালে যেতে হবে।”

ওই এলাকার বাসিন্দা শিক্ষার্থী ফারজানা ইসলাম, শিক্ষার্থী মাইশা আঞ্জুমান ও স্থানীয় সমাজসেবক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, তারা হেঁটে পাঁচ মিনিটে উপজেলা চত্বর, কলেজ ও বাজারে যেতে পারেন।

মাহমুদুল ইসলাম আরও বলেন, “আমাদের বাড়িঘর ওই প্রাচীরের বাইরে পড়ায় এখন এ এলাকায় সন্ধ্যার পর চোর-ডাকাত ও মাদকসেবীদের উপদ্রব বেড়েছে। এতে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

“আমরা অবিলম্বে রাস্তাটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

এ বিষয়ে ইউএনও মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, “উপজেলা পরিষদ চত্বর ও উপজেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাস্তা বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য উপজেলা পরিষদের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বিকল্প রাস্তা বের করে দেওয়া হবে।”