মায়ের ‘পরকীয়ার’ বলি শিশু মনিরা

গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে ছয় বছরের মেয়েকে হত্যার কথা জানিয়েছেন এক ব্যক্তি।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2019, 05:50 PM
Updated : 11 Feb 2019, 05:50 PM

গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক রবিউল ইসলাম জানান, সোমবার রফিকুল ইসলাম গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মোসা. শামীমা খাতুনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

রফিকুল ইসলাম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চাপাত গ্রামের মৃত মাইন উদ্দিনের ছেলে। তার স্ত্রী (২৭) একই উপজেলার হালজোড় গ্রামের বাসিন্দা। তাদের মেয়ে মনিরা খাতুন (৬) স্থানীয় মোহাম্মদ আলী কিন্ডারগার্টেনের প্লে শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে ভাড়া বাড়ির ঘরের ভেতর একটি অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শ্রীপুর থানার ওসি জাবেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে স্বামী রফিকুল ইসলামের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশের কাছে দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে শ্রীপুর থানার এসআই মাহমুদুল হাসান বলেন, রফিকুল ইসলামের তার স্ত্রীর এটি ছিল তৃতীয় বিয়ে। প্রথম ও দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে তিনি ২০১২ সালে প্রেম করে রফিকুল ইসলামকে বিয়ে করেন। বিয়ের দুই বছর পর ২০১৪ সালে রফিকুল চাকরি করতে ওমান চলে যান। রফিকুল প্রবাসী থাকা অবস্থায় মনিরা খাতুনের (৬) জন্ম হয়।

“স্বামী প্রবাসে থাকার সময় তার স্ত্রী অন্য এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ খবর পেয়ে প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসেন রফিকুল ইসলাম। দেশে ফেরার পর পরকীয়ার সন্দেহে রফিকুল ও তার স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই কলহ লেগে থাকত।”

এসআই মাহমুদুল জানান, ২০১৭ সালে গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকায় তারা ভাড়া বাসায় ওঠেন এবং সেখানে একটি কারখানায় চাকরি করা অবস্থায় তার স্ত্রী এক গার্মেন্টস কর্মীর সঙ্গে পালিয়ে যান। চারমাস পর ওই সংসার থেকে ফিরে এসে আবার রফিকুলের সঙ্গে সংসার শুরু করেন।

মাহমুদুর বলেন, প্রায় তিন মাস আগে তারা গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর উপজেলার গিলারচালা গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। তারা দুজনই স্থানীয় ডেনিম্যাক গার্মেন্টস্ লিমিটেড নামের কারখানায় চাকরি নেন।

“এই কারখানায়ও এক সহকর্মীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রফিকুলের স্ত্রী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রফিকুল গত ৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে কাপাসিয়ার চাপাত গ্রামের নিজ বাড়ি চলে যান।”

মাহমুদুল বলেন, রোববার বিকাল সোয়া ৪টায় দিকে তার একমাত্র মেয়ে মনিরাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ঘরের খাটের নিচে পাতিলের ভেতর রেখে পালিয়ে যান রফিকুল।

রোববার ঘটনার পর পালিয়ে গেলেও পুলিশ সোমবার ভোররাতে গাজীপুর মহানগরের নীলেরপাড়া এলাকা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। পরে পুলিশের কাছে খুনের বর্ণনা দেন বলে এসআই মাহমুদুর জানান।