গত ৪ ফেব্রুয়ারি তারা সীমান্তের চইখ্যং পাড়া এলাকায় ৭২ নম্বর পিলার বরাবর শূন্যরেখায় অবস্থান নেন বলে রুমা উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক শৈহ্লাচিং মারমা জানান।
তখন থেকে তারা শূন্যরেখায় তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করছে। এদের মধ্যে রয়েছে রাখাইন, খুমি ও খ্যও সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশু। খোলা জায়গায় তীব্র শীতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
বাংলাদেশের স্থানীয় বম সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
ওই সময় তাদের সঙ্গে কয়েকশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী এলেও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোক আসেনি।
পালিয়ে আসা লোকজনের ভাষ্য, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের ‘চিন’ ও ‘রাখাইন’ রাজ্যে সেখানকার বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘাত চলছে। সংঘর্ষের মাঝে থাকায় প্রাণ ভয়ে তারা এখানে পালিয়ে আসে।
চিন রাজ্য থেকে আসা চহ্লামং রাখাইন সাংবাদিকদের বলেন, “চিন রাজ্যে কান্তালাং পাড়ার কাছে খুব যুদ্ধ চলছে। ভয়ে আমরা পালিয়ে এসেছি।”
রুমার স্থানীয় সাংবাদিক শৈহ্লাচিং মারমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পালিয়ে আসা লোকজনের মধ্যে বেশি আছে রাখাইন সম্প্রদায়। রাখাইন ২৩ পরিবারে রয়েছে পুরুষ ৩৩ জন, নারী ৩৫ জন ও শিশু ২৩ জন। নয় পরিবার খুমি সম্প্রদায়ের রয়েছে পুরুষ ৯ জন, মহিলা ১০ জন ও শিশু ১৬ জন। খ্যও সম্প্রদায়ের ছয় পরিবারের রয়েছে ৮ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা ও ২০ জন শিশু।
রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়াডের্র সাবেক সদস্য রামতাং বম বলেন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক মিয়ানমরের নাগরিক পালিয়ে এসে চইখ্যং পাড়ার পাশে ৭২ নম্বর পিলারের শূন্যরেখায় অবস্থান করছে। আপাতত তাঁবু খাটিয়ে আছে তারা। তবে শীতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
“স্থানীয় বম সম্প্রদায়ের লোকজন এক সপ্তাহ ধরে তাদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।”
এ প্রসঙ্গে রুমা ইউএনও শামসুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের করার কিছু নেই। বিষয়টি বিজিবি দেখবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বান্দরবান সেক্টর কমান্ডার জহিরুল হক বলেন, আশ্রয় নেওয়া লোকজনের সঙ্গে বিজিবির কথা হয়েছে। সংঘাতময় এলাকার পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা কয়েক দিনের মধ্যে চলে যাবে। তবে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।