‘সুইসাইড নোটে’ বিআরডিবি কর্মকর্তার নাম

ফেনীতে এক নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর পাওয়া এক ‘সুইসাইড নোটে’ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2019, 03:40 PM
Updated : 9 Feb 2019, 03:45 PM

শুক্রবার রাতে জেলা শহরের সুলতানপুরে একটি বাড়িতে পঞ্চাশোর্ধ্ব আনোয়ারা বেগমের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পায়ালখোলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ইয়াসিন মজুমদারের স্ত্রী।

আনোয়ারার ভাতিজা মিজানুর রহমান জানান, আনোয়ারা বেগম ২৫ বছর ধরে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডে (বিআরডিবি) ফুলগাজী উপজেলা শাখার মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিআরডিবি ফুলগাজী উপজেলা শাখায় কর্মরত থাকলেও তিনি ফেনী শহরের সুলতানপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

মিজানুর বলেন, গত বৃহস্পতিবার আনোয়ারার স্বামী ইয়াসিন মজুমদার তাদের গ্রামের বাড়ি পায়ালখোলা যান। শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত আনোয়ারা তার ঘরের দরজা না খুললে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়।

“পরে তাদের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙ্গে আনোয়ারার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। এ সময় লাশের পাশ থেকে একটি চিরকুট জব্দ করে পুলিশ।”

লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

আনোয়ারা বেগম চিরকুটটি ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্যকে উদ্দেশ করে লিখেন বলে জানান ওসি।

“চিরকুটে লেখা ছিল-‘আমার মৃত্যুর জন্য বিআরডিবি ফেনী সদর-এর ডিডি শংকর কুমাল পাল ও ফুলগাজীর এআরডিও কৃষ্ণ গোপল রায় দায়ী। তারা দু’জনে গত চার মাস ধরে আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি চার মাস আমাকে বেতন-ভাতা দেয়নি। এর মধ্যে গত ৩১ জানুয়ারি আমি ঋণ নিয়েছি মর্মে জোর করে আমার থেকে স্বীকারোক্তি ও অঙ্গীকারনামা লিখিয়ে নেয় ডিডি শংকর কুমার পাল। এর পর আমি স্ট্রোক করলে আমাকে ঢাকা নেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে ৭দিন পর আমি বুধবার ফেনী ফিরে আসি’।”

ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, চিরকুট জব্দের পর নিহতের স্বজনরা আনোয়ারার মৃত্যুর জন্য বিআরডিবির কর্মকর্তাদের দায়ী করায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আটক করতে শুক্রবার মধ্যরাতে তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু তাদের পায়নি।

আনোয়ারার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ওসি জানান।

আনোয়ারার একমাত্র ছেলে ইয়ামিন মজুমদার পলাশ ঢাকায় লেখাপড়ার পাশপাশি দৈনিক কালেরকণ্ঠ পত্রিকায় শিক্ষানবিশ ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মেয়ে থাকেন স্বামীর বাড়ি।