নাব্য সংকটে ফরিদপুর নৌবন্দর, ব্যবসায়ীরা বিপাকে

পদ্মা নদীতে নাব্য সংকটে ফরিদপুর নৌবন্দরমুখী পণ্যবাহী জাহাজ-কার্গো আটকা পড়ায় বিপাকে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2019, 08:02 AM
Updated : 7 Feb 2019, 08:02 AM

সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্দরের অদূরে গদাধরডাঙ্গি, হাজিগঞ্জ ও জাকেরের সুরা এলাকায় সার, গম, সিমেন্ট, কয়লাসহ নানা পণ্য নিয়ে প্রায় অর্ধশত নৌযান অপেক্ষা করছে।

চট্টগ্রাম থেকে সাড়ে ৮০০ টন সার নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি জাকেরের সুরায় এসে আটকা পড়েছে এমভি মুগনি-১ নামে এমন একটি কার্গো।

এর মাস্টার মো. সাহাবউদ্দিন বলেন, এই কার্গোটি চলার জন্য অন্তত ১৫ ফুট পানি দরকার, কিন্তু কোথাও কোথাও আছে মাত্র তিন-চার ফুট।

“আমরা অরক্ষিত স্থানে পণ্যসহ পড়ে আছি। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

এসব পণ্য খালাসে নানা রকম হয়রানি ও খরচ বেড়ে যাবে বলে তিনি জানান।

ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, “দক্ষিণবঙ্গ সহ বৃহত্তর ফরিদপুরের বহু পণ্য আনা-নেয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ বন্দর। বছরে পাঁচ মাসের মত পানি কম থাকে। তখন পণ্য খালাসে জটিলতা সৃষ্টি হয়। গত এক মাস ধরে পদ্মার বুকে যে অসংখ্য ডুবোচর জেগেছে, সেজন্য বন্দরমুখী পণ্যবাহী প্রায় অর্ধশত জাহাজ ও কার্গো বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী।

“কুমার নদের উৎসমুখ খননে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পদ্মায় যদি পানি না থাকে তা কোনো কাজে আসবে না।”

বন্দরটির ইজারাদার প্রতিষ্ঠান রিয়াজ আহমেদ শান্ত করপোরেশনের প্রতিনিধি নাফিজুল ইসলাম তাপস বলেন, “আগে যে দরে আমরা ঘাট ইজারা নিতাম, এখন বন্দর হওয়ার পর তার চেয়ে তিন গুণ বেশি দরে ইজারা নিচ্ছি। কিন্তু পানিস্বল্পতার কারণে যদি বন্দরে নৌযান ভিড়তে না পারে তাহলে আমাদের লাভ তো দূরে, উল্টো পথে বসতে হবে।”

তবে দুই বছরের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া।

তিনি বলেন, বন্দর সচল রাখতে নৌ মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ যৌথভাবে জরিপ করেছে। দুই বছরের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বন্দর কর্মকর্তা শেখ মো. সেলিম রেজা বলেন, “একেবারে যে নৌযান আসছে না তা নয়। ছোট নৌযান ভিড়ছে। নাব্য ফিরিয়ে আনতে একটি ড্রেজিং মেশিন কাজ করছে। তবে কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে তা সুনর্দিষ্ট করে বলতে পারছি না।”

বহু বছরের পুরনো সিঅ্যান্ডবি ঘাটকে ২০১৭ সালে তৃতীয় শ্রেণির নৌবন্দর ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।