উচ্চ মূল্যের এই ফুল চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ নানা সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
বাণিজ্যিকভাবেই এই ফুলের চাষ করে ফরিদপুরের সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গধাধর ডাঙ্গীর কৃষক আনোয়ার হোসেন বিপুল লাভের আশা করছেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, টিস্যু কালচারের মাধ্যমে তৈরি করা সাত হাজার চারা ভারতের পুনে থেকে আমদানি করে চাষ শুরু করেছেন তিনি। পলি শেড তৈরি, জমি তৈরি ও চারা আমদানিসহ সব মিলে খরচ হয়েছে ২১ লাখ টাকা।
দুই দিন পর পর ফুল তুলে ঢাকার শাহাবাগে বিক্রি করছেন বলে তিনি জানান।
বাজারে ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় আনোয়ারের মুখে হাসি ফুটেছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, এই ফুলের নান্দনিক সৌন্দর্য ফুলের জগতে এক আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। জারবেরা ফুল গাছ থেকে তোলার ১০ থেকে ১৫ দিন এবং গাছে ফোটা অবস্থায় ৩০ থেকে ৪৫ দিন সতেজ থাকে। ফলে এর চাহিদা অনেক।
“সারা বছর ধরেই জারবেরা ফুল ফোটে। তবে এপ্রিল-মে হল ভরা মৌসুম। সব ধরনের জলবায়ুতেই এরা বেঁচে থাকতে পারে। তবে উজ্জ্বল রোদ এদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী।”
বাংলাদেশে শীত ও শীতের শেষ ভাগে জরবেরা ভালো হয়। তবে পলি সেড করে চাষ করলে সারা বছরই ভালো ফলন হয় বলে জানান কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।
“সাত হাজার চারা রোপন করেছি। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২১ লাখ টাকা। প্রতিটি গাছ থেকে বছরে ৫০ থেকে ৬০টি জারবেরা ফুল পাওয়া যাবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।”
বছরে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার ফুল বিক্রির আশা করে এই চাষি বলেন, “কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে তিন বছরে এক কোটি টাকার উপরে ফুল বিক্রয় করতে পারব।”
এই ফুল দেখতে আসা শহরের কে এম রুবেল, রেজাউল করিম বিপুল, সাইদা আক্তারসহ অনেকেই বলেন, এতো নান্দনিক ফুল ফরিদপুরের চাষাবাদ হচ্ছে এটা দেখার জন্যই এসেছেন তারা। তারা ফুলের সৌন্দর্য দেখে তারা মুগ্ধ হয়েছেন।
আলীয়াবাদ ইউনিয়নের গদারধর ডাঙ্গীর কয়েকজন যুবক জানান, ফুল চাষে এত লাভ, বিশ্বাস করতে পারছেন না তাতার।
ইতিমধ্যে আনোয়ারের মতো অনেকেই এই ফুলের চাষ শুরু করেছে বলে তারা জানান।
“মাটি কখনও শুকাতে দেওয়া যাবে না, আবার বেশি ভেজাও রাখা যাবে না। তবেই এই ফুল থেকে অধিক আয় করা যাবে।”
কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, জারবেরা ফুলের চাষ গত বছর থেকে ফরিদপুরে শুরু হয়েছে। এই ফুল রপ্তানিযোগ্য। টিস্যু কালচারের চারা থেকে আনোয়ারের এই বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছে।