নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, এ আসনের ১৩২টি কেন্দ্রে রোববার সকাল ৮টায় নির্ধারিত সময়েই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসনে ভোটার রয়েছেন মোট চার লাখ ১১ হাজার ৮৫৪ জন। নির্বাচনী এলাকায় নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা।
গাইবান্ধার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, “শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর এখনও আসেনি।”
দেশের অন্যান্য আসনের সঙ্গে ৩০ ডিসেম্বরই এ আসনের ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতীক বরাদ্দ হয়ে যাওয়ার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর মৃত্যু হলে গত ২০ ডিসেম্বর এ আসনের ভোট স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
পরে পুনঃতফসিলে ভোটগ্রহণের জন্য ২৭ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করা হয়। জেলা বিএনপির সভাপতি মইনুল হাসান সাদিক পুনঃতফসিলের পর মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও কারচুপি ও অনিয়মের আশঙ্কার কথা বলে ১০ জানুয়ারি তা প্রত্যাহার করে নেন।
এ নির্বাচনের পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ইউনুস আলী সরকার। এছাড়া জাতীয় পার্টির (এরশাদ) দিলারা খন্দকার লাঙ্গল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদি মশাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মিজানুর রহমান তিতু আম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু জাফর মো. জাহিদ সিংহ প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন।
বনগ্রাম ইউনিয়নের সাদুল্লাপুর সরকারি কেএম পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কিছু ভোটার লাইনে অপেক্ষা করছেন।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সুমন মিয়া প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানান, এ কেন্দ্রে মোট ভোটার তিন হাজার ২৩২ জন। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১০৫টি।
সকালে উপস্থিতি কম হলেও বেলা গড়ালে কেন্দ্রে উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।
এ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা জয়েনপুর গ্রামের ভোটার খন্দকার জিল্লুর রহমান বলেন, “ভোট দেওয়া নাগরিক দায়িত্ব। তাই সকালেই ভোট দিতে আসলাম।”
সকাল ৮টা ২০ মিনিটে সাদুল্লাপুর পাইলট বহুমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, বাইরে কোনো লাইন নেই। ভোটাররা একজন, দুইজন করে কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন।
ভোট দিতে আসা উপজেলা সদরের কলেজ রোডের গণেশ চন্দ্র সাহা বলেন, “যারা ব্যবসা করে তারা সকালে ভোট দিতে এসেছে। অনেকে জমিতে কাজ করে দুপুরে ভোট দিতে আসবে।”
এ কেন্দ্রের চার হাজার ৩৩৫ জন ভোটারের মধ্যে সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত ২১১ জন ভোট দিয়েছেন বলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মণ্ডল জানান।
এ কেন্দ্রের চার হাজার ৯০২ জন ভোটারের মধ্যে প্রথম ঘণ্টায় ১০০ জনের ভোট পড়েছে বলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আবদুল্যাহিস শাফি জানান।
এ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা মনোহরপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের (ঘোড়াবান্দা গ্রাম) ভোটার বিপ্লব ইসলাম (৪৫) বলেন, “ভোট নিয়ে মানুষের আগ্রহ কম। তাছাড়া এখন ধান রোপন চলছে। গ্রামের মানুষ জমিতে কাজ করছে। তাই কেন্দ্রে ভোটার কম।”
একই ওয়ার্ডের ভোটার কুদ্দুস মিয়া (৫০) বলেন, “ভোট দেওয়ার ইচ্ছে ছিল না। বাড়িতে কাজ পড়ে আছে। তবুও প্রার্থীর লোকের চাপাচাপির কারণে আসলাম। ভোট দিলাম।”
গাইবান্ধা-৩ আসনের ১৩২টি কেন্দ্রে ১৩২ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৭৮৬ জন সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ১৫৭২ জন পোলিং কর্মকর্তা ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালন করছেন।
গাইবান্ধার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, দুই উপজেলায় দুই হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্য, বিজিপি ২০ প্লাটুন, র্যাব আট প্লাটুন এবং এক হাজার ৫৮৪ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন।