‘ধর্ষণের শিকার’ গৃহবধূর আত্মহত্যা, পল্লি চিকিৎসক গ্রেপ্তার  

নওগাঁয় এক পল্লি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তার অফিস সহকারী এক সন্তানের জননীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

নওগাঁ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2019, 02:28 PM
Updated : 26 Jan 2019, 02:28 PM

ওই গৃহবধূর আত্মহত্যার পর ‘বিষয়টি প্রকাশ হলে’ সেই চিকিৎসককে পুলিশ শুক্রবার গ্রেপ্তার করেছে। 

গ্রেপ্তার হেলাল আহম্মেদ নড়াইলের নড়াগাতী উপজেলার কলাবাড়িয়া শিবপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম সরদারের ছেলে। নওগাঁ শহরের পাটালির মোড় এলাকায় তার ‘পাইলস্ কিউর সেন্টার’ রয়েছে।

নাম ফলকে লেখা রয়েছে- ডা. হেলাল আহম্মেদ, ডিপিএইচ, মেডিসিন/ ডিএমএফ, ঢাকা।

মৃত খাতিজা আকতার (৩০) শহরতলীর  আরজী নওগাঁ মধ্যপাড়ার রাজমিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল হাই বলেন, পাঁচ বছর আগে শহরের পাটালির মোড়ে শাহিন হোসেন নামের এক ব্যক্তির বাড়ির দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে ‘পাইলস্ কিউর সেন্টার’ হেলাল আহম্মেদ।

“তিন সপ্তাহ আগে আয়া কাম চেম্বার সহকারী হিসেবে চাকরি নেন এক সন্তানের জননী খাতিজা আকতার। গত ১৮ জানুয়ারি বিকালে হেলাল তার চেম্বারের ভিতরে খাতিজাকে ধর্ষণ করেন।”

ওসি বলেন, পুলিশ শুক্রবার ভোরে হেলালকে তার পাটালির মোড়ের চেম্বার থেকে গ্রেপ্তার করেছে।পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি খাতিজাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন।

খাতিজার জা আয়েশা সিদ্দিকা সাংবাদিকদের বলেন, প্রাণচঞ্চল খাতিজা হঠাৎ নীরব হয়ে যাওয়ায় তাদের সন্দেহ হলে বিষয়টি জানতে চান। কিন্তু খাতিজা প্রথমে কিছু বলেননি। পরে পীড়াপীড়ি করলে ডাক্তারের ধর্ষণের কথা জানান।

“ওই সময় খাতিজা লজ্জায় স্বামী, সন্তান বা অন্য কারও দিকে তাকাতে পারছেন না বলে হতাশার কথা বলেন।”

আয়েশা বলেন, তার স্বামীর গৃহে গত ২০ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিষ পান করেন। প্রথমে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ২২ জানুয়ারি মধ্যরাতে খাতিজার মৃত্যু হয়।

খাতিজার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে ২২ জানুয়ারি খাতিজাকে দাফনের পর খাতিজার মোবাইল ফোনে ওই ডাক্তার একাধিকবার ফোন করেন।

“কিন্ত আমি ফোন ধরিনি। কৌতূহলবশতঃ ফোন চেক করতে গিয়ে পাওয়া যায় তাকে ধর্ষণের বর্ণনাসহ রেকর্ড। মোবাইল ফোনে খাতিজা ওই ডাক্তারের চেম্বারের বাড়িওয়ালাকে ধর্ষণের বিষয়টি বর্ণনা করেন।”

জাহাঙ্গীর বলেন, বিষয়টি নওগাঁ সদর থানায় অবহিত করলে পুলিশ খাতিজার বাবাকে বাদী করে এ বিষয়ে একটি মামলা নিয়ে শুক্রবার ডাক্তার হেলালকে গ্রেপ্তার করে।

খাতিজার মা শাহনাজ খাতুন বলেন, “ওই ডাক্তার আমার ৫ বছর বয়সী নাতনিকে মা হারা করেছে। আমি তার উপযুক্ত শাস্তি চাই।”