তিন জেলায় সড়কে প্রাণ হারাল ১১ জন

কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লালমনিরহাটে দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন।

জেলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2019, 05:55 PM
Updated : 19 Jan 2019, 05:55 PM

এর মধ্যে রয়েছেন কুমিল্লায় আট জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই জন এবং লালমনিরহাটে এক জন।

কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি ও বুড়িচং উপজেলায় চার দুর্ঘটনায় আট জন নিহত হয়েছেন।

শনিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে দাউদকান্দির গৌরিপুর ও মোবারকপুর, বুড়িচংয়ের কোরপাই ও কুমিল্লা ক্যান্টমেন্ট এলাকায় দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।

নিহতদের দুজন হলেন গ্রীন লাইন পরিবহনের সুপারভাইজার ফাহাদ আল রাজী ফয়সাল এবং হেলপার মানোয়ার হোসেন। বাকিদের নাম জানা যায়নি। 

দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মায়ের দোয়া পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের দাউদকান্দির গৌরীপুর বাস স্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারীকে চাপা দিয়ে খাদে পড়ে যায়।

“পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দুই ঘণ্টাব্যাপী উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে আরও পাঁচ জন।”

হতাহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ সংলগ্ন মোবারকপুর এলাকায় গ্রীন লাইন পরিবহনের একটি বাস একটি কভার্ড ভ্যানকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়; এরপর পেছন থেকে একটি ট্রাক গ্রীন লাইনের বাসকে ধাক্কা দেয়।

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী গ্রীন লাইন পরিবহনের একটি বাস মোবারকপুরে ভোর ৬টার দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ক্যভার্ড ভ্যানকে পিছন থেকে ধাক্কা দেয়।

“এ সময় পিছন থেকে অপর একটি ট্রাক ধাক্কা দেয় গ্রীন লাইনের বাসটিকে। এতে ঘটনাস্থলে বাসের সুপার ভাইজার ফয়সাল এবং হেলপার মানোয়ার গুরুতর আহত হন। ঢাকায় নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়।”

নিহত ফাহাদ আল রাজী ফয়সাল কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার লালবাগের কায়কোবাদ মজুমদারের ছেলে এবং মানোয়ার হোসেন মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার কাজীকান্দা গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে।

বুড়িচং উপজেলায় দুর্ঘটনা দুটি ঘটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোরপাই ও কুমিল্লা ক্যান্টমেন্ট এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর দেড়টার দিকে কোরপাই এলাকায় একটি প্রাইভেটকারের সামনের চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে গেলে দুই জন নিহত হন।

এছাড়া মহাসড়কে কুমিল্লা ক্যান্টমেন্ট মার্কেটের সামনে র‌্যাকারের ধাক্কায় এক নারী নিহত হয়েছেন।

ময়নামতি হাইওয়ে পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। নিহতের পরিচয় জানা যায়নি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, সিলেট-ঢাকা রুটের অভিজাত পরিবহন লন্ডন এক্সপ্রেসের একটি বাসের সঙ্গে একটি ট্রাকের সংঘর্ষে বাসটির চালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন।

শনিবার ভোর ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার শশই এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিহতরা হচ্ছে লন্ডন বাসের চালক আনোয়ার মিয়া ও ট্রাকের হেলপার ইউনুস মিয়া।

এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত আটজন। তাদের একজনকে ঢাকায় এবং দুজনকে সিলেটের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লন্ডন এক্সপ্রেসের বাসটি সিলেট যাচ্ছিল। শশই ইসলামপুরে এলাকায় বিপরীতমুখী পাথরবোঝাই ট্রাকটির সঙ্গে এর সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রাকের হেলপার ও বাসের ড্রাইভার মারা যায়।”

লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ট্রাকের সঙ্গে প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন।

শনিবার সকালে হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতার রমনীগঞ্জ এলাকায় মহাসড়কে আকিজ কোম্পানী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত কারচালক শরিফুল ইসলাম (২১) নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ট্যাংগোনমারী ইউনিয়নের চারাভিজা গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক জানান, সকালে ঘন কুয়াশার মধ্যে লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে আসা পাটগ্রাম অভিমুখে দ্রুতগামী একটি সার বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেট কারের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

“এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং চালক শরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান।”

আহত হেলপারকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।