রাবির ৫ নেপালি শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাস ত্যাগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা নেপালের পাঁচ শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে তাদের ডরমিটরি থেকে চলে গেছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিশফিকুল ইসলাম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2019, 02:55 PM
Updated : 16 Jan 2019, 03:04 PM

তারা ইতিমধ্যে দেশে চলে গেছেন বলে নেপাল থেকে আসা আরেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন। তবে তারা কয়দিন আগে ডরমিটরি ছেড়েছে তা কেউ বলতে পারছে না।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের ভাষ্য, তারা লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ার কারণে চলে গিয়ে থাকতে পারে।

তবে অন্য কোনো কারণও থাকতে পারে বলে মনে করেন ওই দেশ থেকে আসা আরেক শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশন্যাল ডরমিটরির ওয়ার্ডেন অধ্যাপক আশাদুল ইসলাম সোমবার প্রক্টরকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

চলে যাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্স বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী উজ্জ্বল মাহাতো (পাসপোর্ট নম্বর-০৯৮৮১৯০১ ও ভিসা নম্বর - এ ০৮৪৮৪২৮), সুজান পারাজুলি (পাসপোর্ট নম্বর ১০৬৪৫০৫৩ ও ভিসা নম্বর এ ০৮৪৮২৯৮), মিলন কুমার মোকতার (পাসপোর্ট নম্বর -০৬৫৮২২৬৪ ও ভিসা নম্বর -এ০৮৪৮২৯৬), বিনোদ লামিছানে (পাসপোর্ট নম্বর -১০৬৪৫০২৯ ও ভিসা নম্বর এ০৮৪৮৫০৯) এবং কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী লিলা জুং রায়া মাঝি (পাসপোর্ট নম্বর -০৯৮৬৬৩৯৮ ও ভিসা নম্বর -এ০৮৪৮৪৩১)।

তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন বলে ডরমিটরির ওয়ার্ডেন আশাদুল ইসলামের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে।

প্রক্টরকে আশাদুল জানান, “পাঁচজন নেপালী শিক্ষার্থী কোনো অনুমতি ছাড়া শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশন্যাল ডরমিটরি ত্যাগ করছে। বিভিন্ন রুম পর্যবেক্ষণের সময় বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময় তাদের পাশের রুমের একজন নেপালী ছাত্র আনন্দ কুমার সাহা আমাদের নিশ্চিত করে যে তারা আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে না। তাই একেবারেই ডরমিটরি ত্যাগ করে দেশে ফেরত গেছে।” 

ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের নেপালি শিক্ষার্থী আনন্দ কুমার সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারা এখানে পড়বে না বলে দেশে চলে গেছে। তবে এ বিষয়ে আমি আর বেশিকিছু বলতে পারব না। তাদের অন্য কোনো কারণও থাকতে পারে।”

এদিকে চলে যাওয়া ওই বিভাগগুলোর প্রধানরা বলেন, পালিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা অনিয়মিত ছিল।

এ ব্যাপারে ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্স বিভাগের সভাপতি কামরুজ্জামান বলেন, “ওই শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকেই অনিয়মিত ছিল। বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পড়ালেখার প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় চলে যেতে পারে।”

কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি বিমল কুমার প্রামাণিকও শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে একই মত পোষণ করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর লুৎফর রহমান বলেন, “কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে না জানিয়ে ডরমিটরি ত্যাগ করার বিষয়টি আমাকে লিখিত জানানো হয়েছে। বিষয়টি একাডেমিক শাখা দেখাশুনা করে। এ বিষয়ে দায়িত্বরত উপ-রেজিস্ট্রারকে জানানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি চিন্তা ভাবনা করে ব্যবস্থা নেবে।”

একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার এএইচএম আসলাম হোসেন বলেন, “তারা যে ভর্তি বাতিল করে চলে গেছে বা এখানে পড়বে না সে বিষয়ে আমাকে লিখিত দেয়নি। এছাড়া তারা যে ক্লাস করছে না তাও বিভাগ থেকে জানানো হয়নি। লিখিত দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারব। তারা যদি আবার ফিরে আসে তাহলে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।”