দুর্ঘটনায় ট্রাকে আগুন, পাঁচ জেলায় নিহত ৬

যশোর, ঝিনাইদহ,গোপালগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলায় দুর্ঘটনায় ছয় জন নিহত হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2019, 05:39 PM
Updated : 13 Jan 2019, 06:00 PM

রোববার এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। এর মধ্যে যশোরে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আগুন ধরে যায়, যাতে দগ্ধ হয়ে এক চালকের মৃত্যু হয়েছে।

যশোর প্রতিনিধি জানান, রাত ৯টার দিকে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আগুন ধরে গেলে এক চালকের মৃত্যু হয়েছে।

নওয়াপাড়া পৌরসভার চেঙ্গুটিয়া উপহার ফিলিং স্টেশনের সামনে যশোর-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনার পর মহাসড়কে দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল বলে জানান নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, খুলনাগামী ১০ চাকার একটি খালি ট্রাক ও যশোরগামী সার বোঝাই অপর একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি ট্রাকেই আগুন জ্বলে ওঠে।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।

নওয়াপাড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার খান এহসান উল আলম জানান, প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলে খুলনাগামী ১০ চাকার খালি ট্রাকের চালকের আসন থেকে আগুনে পোড়া একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অপর ট্রাকে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তেলের ট্যাংক ফেটে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। 

ওসি আতাউর রহমান আরও জানান, জ্বলন্ত দুই ট্রাকের একটি থেকে এক চালকের পুড়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। মরদেহটি অঙ্গার হয়ে গেছে। এখনও পরিচয় পাওয়া যায়নি।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গোপালগঞ্জে নছিমনে পিক-আপের ধাক্কায় কামরুল ইসলাম (২৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

সকালে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট সড়কের  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান সদর থানার ওসি মনিরুল ইসলাম।

ওসি বলেন, সকালে গোপালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মালামাল নছিমনে করে ঠিকাদারের কাজের সইটে নিয়ে যাচ্ছিলেন কামরুল। কংশুর এলাকায় একটি পিকআপ তার নছিমনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে কামরুল নছিমন থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।

লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহ শহরের হামদো বাইপাস এলাকায় ট্রাক চাপায় ইমরান হোসেন (১৩) নামের ৬ষ্ট শ্রেণির এক স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে।

সকাল ৯টার দিকে শহরের আলহেরা বাইপাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান।

ওসি এমদাদুল হক বলেন, সদর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে ইমরান বাইসাইকেল যোগে বাড়ি থেকে আলহেরা ইসলামী ইনস্টিটিউট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আসছিল।

“পথে বাইপাস মোড়ে ঝিনাইদহ থেকে যশোরগামী একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।”

খবর পেয়ে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে চালককে গ্রেপ্তারে পুলিশের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ট্রাকটি ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা নেওয়া হবে এবং চালকে অচিরেই গ্রেপ্তার করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, রাত ১০টার দিকে শহরের স্টেশন রোডে দ্রুতগামী একটি ট্রাকের চাপায় বদরুল আলম (৩৫) নিহত হন।

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, বদরুল লালবাগ গ্রামের সুরমাভেলী এলাকার মৃত রঙ্গু মিয়ার ছেলে।  তিনি মৌলভীবাজার পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির মটর সাইকেল মেকানিক ছিলেন।

শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মো. রাজন জানান, বদরুল আলম স্টেশন রোডে সাইকেল দাঁড় করিয়ে গল্প করছিলেন।

“এ সময় ভানুগাছ রোড থেকে আসা একটি ট্রাক রাস্তার পাশ দিয়ে এসে তাকে চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন।”

তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয় বলে ওসি জানান।

কেরানীগঞ্জ-দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকসহ এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অটোরিকশায় থাকা আরও তিন যাত্রী।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই আজাহারুল হক জানান, উপজেলার ঢাকা-মাওয়া সড়কের আব্দুল্লাহপুর স্ট্যান্ড এলাকায় রোববার এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন কেরানীগঞ্জের সোনাকান্দা এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে অটোরিকশা চালক মকবুল হোসেন (৪০) ও আলুকান্দার জসিম উদ্দিনের মেয়ে নেহা আক্তার (৫)।

আহতরা হলেন নিহত শিশুর মা উর্মি আক্তার (৩০), ভাই সায়েম (৮) ও চাচাতো ভাই মারুফ (১৫)। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়দের বরাতে এসআই আজহারুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাস পেছন থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশাটিকে চাপা দিয়ে যায়। এতে অটোরিকশা চালক মকবুল ও শিশু নেহা ঘটনাস্থলেই মারা যায়।