নীলফামারীতে শিশুর শ্লীলতাহানির চেষ্টা, ধর্ষণের সংবাদ প্রকাশ

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

বিজয় চক্রবর্তী কাজল নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2019, 04:24 PM
Updated : 13 Jan 2019, 04:24 PM

তবে কোনো কোনো গণমাধ্যমে এই ঘটনাকে ধর্ষণ বলে প্রচার করেছে, যা মেয়েটির পরিবার অস্বীকার করে।

উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাবাড়ী শিশু মঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন ওই মেয়েটির (১০) মা।

তিনি বলেন, প্রতিদিনের মতো গত বুধবার (৯ জানুয়ারি) তার মেয়ে বিদ্যালয়ের যায়। দুপুর দেড়টার দিকে বিদ্যালয় ছুটির পর বিদ্যালয়ের বারান্দায় সহপাঠীদের সঙ্গে খেলছিল।

খেলা শেষে শ্রেণিকক্ষ থেকে স্যান্ডেল ও বই বের করতে ভেতরে গেলে ওই শিক্ষক তার হাত ধরে টানেন এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন বলে মেয়েটির মায়ের অভিযোগ।

তিনি বলেন, পরদিন সকালে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানকে বিষয়টি জানালে তিনি বিচারের আশ্বাস দেন।

মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বুধবার দাপ্তরিক কাজে আমি রংপুরের ডিডি অফিসে ছিলাম। বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয় আসলে ছাত্রীটির মা আমাকে জানায় তার মেয়েকে বিদ্যালয়ের ওই সহকারী শিক্ষক শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে।”

বৃহস্পতিবার কাজের চাপ থাকায় মেয়েটির পরিবারেকে শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে আসতে বলেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কিন্তু তারা আসেননি। তবে তাদের এই অভিযোগটি আমি মৌখিকভাবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। আর ওই ছাত্রীটি আমার দূর সর্ম্পকের নাতনিও হয়।”

মেয়েটির বাবা অভিযোগ করেন, “শনিবার সকালের দিকে লোক মুখে খবর পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিক আমার বাড়ি আসেন। তারা আমার মেয়ে ও স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

“আমার মেয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিল যে ওই স্যার তার হাত ধরে টানা-হ্যাঁচড়া করেন আর শরীরে হাত দিয়েছিল। কিন্তু তারা (সাংবাদিক) পত্রিকায় ছাপিয়েছে আমার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তারা মিথ্যা খবর ছাপিয়েছে। তারা আমার মেয়ের সম্মানহানি ঘটিয়েছে।”

সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধান শিক্ষকের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়েটি জানিয়েছে ওই শিক্ষক তার শরীরে  হাত দিয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।”

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান মন্ডল বলেন, “আমি বিষয়টি জানি না। তবে রোববার সকালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানতে পেরেছি। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষা  কর্মকর্তাকে বিষয়টি খোঁজ খবর নিতে বলেছি।”

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার বলেন, “শনিবার পর্যন্ত মেয়েটিকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানতাম। তবে রোববার কিছু গণমাধ্যমে তাকে  মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।”

মেয়েটির অভিভাবককে বারবার লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

সৈয়দপুর থানা পুলিশ বলছে, ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের জানা নেই। ওই শিক্ষক মেয়েটির হাত ধরে টানাটানি করেছে বলে তাদের কাছে খবর আছে।