ফেনীর নতুন কারাগারে বন্দিদের স্থানান্তর

ফেনীর শত বছরের পুরাতন জেলা কারাগার থেকে বন্দিদের নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2019, 12:09 PM
Updated : 12 Jan 2019, 12:35 PM

সদ্য বিদায়ী জেলার শংকর মজুমদার জানান, উদ্বোধনের প্রায় আড়াই মাস পর শনিবার ভোর থেকে একাধিক প্রিজন ভ্যানে করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বন্দিদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শনিবার রাত নাগাদ পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে পারে।

ফেনী কারাগারে সদ্য যোগ দেওয়া জেলার দিদারুল আলম বলেন, গত বছরের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন করাগারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

“ফেনী শহরের রানীরহাট এলাকায় সাড়ে সাত একর জমির ওপর নির্মিত কারাগারের নতুন ভবন উদ্বোধনের পর কিছু জটিলতা থাকলেও তার সমাধান শেষে পুরোনো কারাগার থেকে নতুন করাগার বন্দিদের স্থানান্তর শুরু হয়েছে।”

শনিবার ভোর থেকে ৫টি প্রিজন ভ্যানে করে (প্রতিভ্যানে ৪০ জন) বন্দিদের স্থানান্তর কাজ শুরু হয় জানিয়ে তিনি বলেন, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে প্রিজন ভ্যান এনে বন্দি স্থানান্তরের কাজ করা হচ্ছে।

পুরাতন কারাগার থেকে বন্দিদের গাড়িতে ওঠানো হচ্ছে

“বন্দি স্থানান্তর উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বন্দি স্থানান্তরিত হওয়ার রুটে পুলিশ ও র‌্যাবের বিশেষ টহল রয়েছে। শনিবার রাতের মধ্যে ৭৮৫ বন্দির স্থানান্তর প্রক্রিয়া শেষ হবে।”

শনিবার বন্দিদের স্থানান্তর করা হলেও শুক্রবার থেকে মালামাল স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।

ফেনী জেলা কারাগারের সুপার রফিকুল কাদের জানান, ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩৫০ জন বন্দি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন অত্যাধুনিক এ কারাগারে বন্দি ও কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য থাকছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।

৩৫০ জন ধারণ ক্ষমতা হলেও এ কারাগারে প্রায় দুই হাজার বন্ধি থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কারাগারের ১৬টি ভবনের মধ্যে একটি দ্বিতল আধুনিক হাসপাতাল, বন্দিদের কাউন্সেলিং করা এবং তাদের মাঝে কর্মস্পৃহা সৃষ্টি ও কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ওয়ার্ক শেড, খেলার মাঠ, পুকুর, উদ্যান, স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

জেলার মো. দিদারুল আলম জানান, নতুন করাগারে বন্দিদের সুযোগ সুবিধা বাড়লেও জনবল সংকট থাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে। পুরোনো কারাগারে ১১৬ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৯০ জন। তাদের মধ্যে আবার ১০ জন ছুটিতে রয়েছেন।

নতুন কারাগারে পরিধি বড় হওয়ায় জনবল প্রয়োজন হলেও সহসা নতুন জনবল নিয়োগ হচ্ছে না বলে জানালেন চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক এ কে এম ফজুলল হক।

জনবল বৃদ্ধির জন্য প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।

১৯১৫ সালে শহরের মাস্টার পাড়ায় দেড় একর জায়গার উপর প্রথমে সাব-জেল প্রতিষ্ঠিত হয়। দুই জন নারী ও ১৭০ জন পুরুষ ধারণক্ষমতার কারাগারটি ১৯৯৮ সালে জেলা কারাগারে উন্নীত হয়। পুরোনো কারাগারে ১৭২ জন ধারণ ক্ষমতা থাকলেও গড়ে সাড়ে সাতশ বন্দি কারাগারে থাকত। ধারণ ক্ষমতার পাঁচ গুণ বেশি বন্দি রাখতে হিমশিম খেতে হতো কারা কর্তৃপক্ষের।