ভোটে ‘অনিয়মের’ ছবিসহ প্রতিবেদন করছে রাজশাহী বিএনপি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘অনিয়মের’ প্রতিবেদন তৈরির জন্য অডিও, ভিডিও ও ছবিসহ তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছেন রাজশাহীর বিএনপি প্রার্থীরা।

বদরুল হাসান লিটন রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2019, 01:09 PM
Updated : 11 Jan 2019, 01:15 PM

এসব তথ্য-প্রমাণ নিয়ে নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বলেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহীর পাঁচটি আসনে ভোটে ‘অনিয়মের’ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মী ও পোলিং এজেন্টরা তথ্য সংগ্রহ করছেন।

“অডিও, ভিডিও ও স্থিরচিত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেগুলো প্রতিবেদন আকারে কেন্দ্রে জমা দেওয়া হবে।”

তথ্য পাওয়ার জন্য প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে প্রার্থীরা জানিয়েছেন।

রাজশাহী-৩ আসনে ভোটে ‘অনিয়মের’ প্রতিবেদন প্রায় চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

ভোটের দিন মোহনপুর উপজেলার পাকুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহিংসতায় নিহত মেরাজুল ইসলামকে ধানের শীষের সমর্থক ধরে নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে।

এ আসনের বিএনপি প্রার্থী শফিকুল হক মিলন বলেন, “মেরাজুলের ভাই হুমায়ুন আওয়ামী লীগের কর্মী হলেও নিহত মেরাজুল বিএনপির সমর্থক।

“মেরাজুল ধানের শীষের প্রচারণা চালিয়েছেন, যার তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। এছাড়া ওই কেন্দ্রে সহিংসতার সময় একটি লাল গাড়ি থেকে গুলি ছোড়ার তথ্য-প্রমাণও আমরা পেয়েছি। সেগুলো প্রতিবেদনের সঙ্গে দেওয়া হবে।”

রাজশাহীর ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি প্রার্থীরা।

অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনের দিন দুপুরে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন রাজশাহী-৪ আসনের বিএনপি প্রার্থী আবু হেনা

তারা হলেন, রাজশাহী-১ আসনে আমিনুল হক, রাজশাহী-২ আসনে মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী-৩ আসনে শফিকুল হক মিলন, রাজশাহী-৪ আসনে আবু হেনা ও রাজশাহী-৫ আসনে নজরুল ইসলাম মণ্ডল।

রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী ছিল না।

পাঁচটি আসনের মধ্যে শুধু রাজশাহী-২ আসনে নৌকার প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশার সঙ্গে ধানের শীষের মিজানুর রহমান মিনুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে, ১২ হাজার ১৪৬ ভোটে হেরেছেন তিনি। বাকি চারটিতে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন বিএনপি প্রার্থীরা।

আমিনুল হক ৮৫ হাজার ৩৮১, শফিকুল হক মিলন এক লাখ ৩০ হাজার ৫৮২, আবু হেনা এক লাখ ৭৬ হাজার ২৫৫ ও নজরুল ইসলাম এক লাখ ৫৮ হাজার ৬৮৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।

এদের মধ্যে আবু হেনা নির্বাচনের দিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। অন্যরা শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে ছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় বিএনপির একজন নেতা বলেন, বিএনপির কেন্দ্র থেকে গত ৩ জানুয়ারি ধানের শীষের প্রার্থীদের চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে প্রত্যেক প্রার্থীকে নির্বাচনের ‘অনিয়মের’ তথ্য সাত দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমার নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রার্থীদের নিজের ও পরিবারের সদস্যদের অবরুদ্ধ হয়ে পড়া বা হামলায় আহত, সহায়-সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য ও ছবি, ‘ভোট জালিয়াতি’, সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ‘তাণ্ডব’ ও অন্যান্য ‘অনিয়মের’ সচিত্র প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

সেই অনুযায়ী ১০ জানুয়ারি ছিল প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তবে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে রাজশাহীর কোনো প্রার্থী তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি বলে নেতারা জানিয়েছেন।