মন্ত্রিসভায় এই প্রথম নেই কিশোরগঞ্জের কেউ

বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো মন্ত্রিসভায় কিশোরগঞ্জ জেলার কারও নাম না থাকার ঘটনা ঘটল। 

মারুফ আহমেদ কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2019, 05:16 PM
Updated : 7 Jan 2019, 06:44 PM

তবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এই জেলার বাসিন্দা। সোমবার তিনিই নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়িয়েছেন।

মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে প্রতিটি সরকারেই কিশোরগঞ্জ থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কেউ না কেউ ছিলেন।

বিদায়ী সরকারে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক এবার এমপি হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই মারা যান।

যেদিন শোলাকিয়ায় লাখো মানুষ সৈয়দ আশরাফকে বিদায় জানায়, সেদিনই কিশোরগঞ্জের মানুষ শুনল এ জেলায় মন্ত্রী না থাকার সংবাদ।

সৈয়দ আশরাফের বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন দেশের প্রথম উপ রাষ্ট্রপতি; বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ এই সহচর মুজিব নগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বের কাতারে ছিলেন।

১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সংসদ উপনেতা ছিলেন; বঙ্গবন্ধুর সরকারে শিল্পমন্ত্রীও ছিলেন তিনি। তখন কিশোরগঞ্জের মনোরঞ্জন ধর হয়েছিলেন আইনমন্ত্রী এবং আসাদুজ্জামান খান হয়েছিলেন পাটমন্ত্রী।

আসাদুজ্জামান খান ১৯৭৫ সালে খন্দকার মোশতাক আহমদের মন্ত্রিসভায় নৌপরিবহনমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।

১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের সরকারে ডা. ফজলুল করিম স্বাস্থ্য এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৬ সালে এইচ এম এরশাদের সরকারে হাবিবুল হক ভূঁইয়া আইনমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৮ সালে মুজিবুল হক চুন্নু ছিলেন ভূমি উপমন্ত্রী।

১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে এ বি এম জাহিদুল হক নৌচলাচল উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৬ সালের শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে জিল্লুর রহমান হন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। তখন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ওই সংসদে ডেপুটি স্পিকার ছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে এম ওসমান ফারুক ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।

২০০৮ সালে শেখ হাসিনার সরকারে সৈয়দ আশরাফ স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর দায়িত্বে আসেন। আবদুল হামিদ তখন স্পিকারের দায়িত্ব নেন।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল আবদুল হামিদ প্রথম মেয়াদে রাষ্ট্রপতি এবং ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন।

২০১৪ সালে শেখ হাসিনার সরকারে পুনরায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হন সৈয়দ আশরাফ। ২০১৫ সালে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

একই সরকারে জাতীয় পার্টি থেকে মো. মুজিবুল হক চুন্নু শ্রম ও কর্ম সংস্থান প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

এবার কোনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী না থাকা মেনে নিতে পারছেন না কিশোরগঞ্জবাসী। মন্ত্রিসভায় এই জেলার কাউকে অন্তর্ভুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি চেয়েছেন জেলার পেশাজীবী ও সামাজিক নেতারা।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম এ রশীদ, জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক খান, পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা সভাপতি ভুপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহবয়ক লেলিন রায়হান শাহিন, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মজিবুর রহমান বেলাল, মানবাধিকার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আহমাদ ফরিদ, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আহবায়ক শেখ সেলিম কবীর ও সম্মিলিত নাগরিক ফোরামের সভাপতি এনায়েত করিম অমি তাদের জেলা থেকে মন্ত্রিসভায় কাউকে দেখার প্রত্যাশার কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।