ভোটের দিন ধর্ষণ: মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দল নোয়াখালীতে

ভোটের দিন নোয়াখালীতে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে নোয়াখালীতে এসেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের দুটি তদন্ত দল।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2019, 11:28 AM
Updated : 2 Jan 2019, 03:38 PM

বুধবার দুপুরে তারা নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী এবং হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের প্রধান (পরিচালক, অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে তারা খতিয়ে দেখার জন্য এসেছেন।

রোববার রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মধ্যবাগ্যা গ্রামের এক নারীকে (৪০) তার বাড়িতে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই নারী দাবি করেন, নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জেরে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ওই নারীর স্বামী থানায় যে মামলা দায়ের করেছেন, তাতে নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত তাদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আসামিরা তার বসতঘর ভাংচুর করে, ঘরে ঢুকে বাদীকে পিটিয়ে আহত করে এবং সন্তানসহ তাকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে।

মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের প্রধান আল-মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ওই নারী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। মেডিকেল প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হবে।”

প্রয়োজনে ‘ভিকটিমকে’ আইনি সহযোগিতা দেওয়া হবে জানিয়ে আল-মাহমুদ বলেন, যে কোনো অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় মানবাধিকার কমিশন ভুক্তভোগীর পাশে থাকবে।

তদন্ত দলের অন্য দুই সদস্য হলেন মানবাধিকার কমিশনের উপ-পরিচালক সুস্মিতা পাইক ও গাজী সালাহউদ্দিন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তদন্ত দলের প্রধান সেলিনা আক্তার বলেন, ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, কোন প্রেক্ষাপটে কী ঘটেছে এসব জানার চেষ্টা করবেন তারা।

“আমরা বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলব। ঘটনাস্থলে যাব। বিস্তারিত তদন্ত করব।”

এ দলের অন্য দুই সদস্য হলেন নার্গিস আক্তার ও হাসিবুর রহমান।

জেলার পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ বলেন, মামলা হওয়ার পর সোমবার কুড়াইল্যা বাসু (৪০) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরপর মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার দুপুরে কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় সোহেল (৩৫) ও স্বপন (৩৫) নামে দুজনকে।

এসপি ইলিয়াছ শরীফ আরও জানান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন।

সেখান থেকে তিনি নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করবেন বলেও এসপি জানান।

“ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ডিআইজি বলেছেন, তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে অপরাধীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে,” বলেন এসপি ইলিয়াছ শরীফ।