আ. লীগ ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

আওয়ামী লীগের লোকজন ভোটরদের ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2018, 01:37 PM
Updated : 27 Dec 2018, 01:37 PM

বৃহস্পতিবার নিজ নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।

ফখরুল বলেন, “কিছুদিন আগে যখন ঠাকুরগাঁও এসেছিলাম তখন পরিস্থিতি বেশ স্বাভাবিক ছিল। বুধবার রাতে এখানে এসে আমি যেটা দেখলাম প্রকাশ্যে অস্ত্র, রামদা, লাঠিসোটা নিয়ে আওয়ামী সন্ত্রসীরা বিভিন্ন পাড়া-এলাকায় ঢুকছে। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার ধমক দিচ্ছে।”

তাদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ উঠেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।  

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসনের পাশাপাশি নিজ জেলা ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকেও প্রার্থী হয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও-১ নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। হাতপাখা নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল জব্বার ও মিনার নিয়ে নির্বাচন করছেন ইসলামী ঐক্যজোটের রফিকুল ইসলাম।

মির্জা ফখরুল বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটা প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনের আর পরিবেশই নেই। সারাদেশে বিরোধী প্রার্থীদের উপর আক্রমণ চলছে। আর রাষ্ট্রের প্রশ্রয়েই এটা হচ্ছে, যেটা অবিশ্বাস্য।

প্রশাসনের নিরপেক্ষতা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কখনোই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা এখন প্রমাণিত হচ্ছে নির্বাচনে বিরোধী দল কোনো প্রকার কাজই করতে পারছে না। প্রচার প্রচারণার জন্য মাঠে তাদের নামতেই দেওয়া হচ্ছে না।

“যেসব এলাকায় প্রশাসন কিছুটা নমনীয়, সেসব জায়গায় বিরোধীরা কিছুটা মাঠে নামতে পারছে, অন্য জায়গায় নামতে পারছে না।”

ফখরুল বলেন, “ঠাকুরগাঁও-১ আসন যেহেতু আমার আসন, সে কারণে তারা এই আসনকে টার্গেট করেছে। সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেনের সন্ত্রাসীরা নিজেদের নির্বাচনী অফিস পুড়িয়ে দিচ্ছে। পরে তারা বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছে।”

এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, “সদর উপজেলার জগন্নাথপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি বাড়ি আগুনে পুড়ে যায়। এটাও বিএনপির লোকজনের উপর চাপানো হয়েছে। বিএনপির কোনো লোকই এসবের সঙ্গে জড়িত ছিল না। আমরা এখানে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করছি।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গতকাল আমার স্ত্রী ও ছোট মেয়ে শহরের একটা মহল্লায় নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়েছিলেন। সেখানে রামদা হাতে নিয়ে তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, সেখানে প্রচার-প্রচারণা করা যাবে না। এটা কোন ধরনের আচরণ?”

এ পরিস্থিতিতে ঐক্যফ্রন্ট শেষ নির্বাচনে থাকবে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা তো নির্বাচনে আছিই। আমরা নির্বাচনে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত থাকতে চাই। আমরা দেখাতে চাই যে আজকে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।”

নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের জয়ের সম্ভবনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “মানুষ জেগে উঠেছে, তারা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত মনে করি, আমরাই জয়লাভ করব। জনগণের শক্তি দিয়ে সবকিছুকেই পরাজিত করা যায়। আমরা সেই চেষ্টাটাই করে যাচ্ছি। জনগণ তাদের শক্তি ৩০ ডিসেম্বর প্রয়োগ করবে।”

এ সময় জেলা বিএনপি সভাপতি তৈমুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক জাফরুল্লাহ, জেলা যুবদল সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, জেলা ছাত্রদল সভাপতি মো. কায়েস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।