যশোরে ওয়াক্কাসের মনোনয়নে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মী

যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে ২০ দলীয় জোটে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে মনোনয়ন দেওয়ায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

যশোর প্রতিনিধিসিকদার খালিদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2018, 04:47 PM
Updated : 9 Dec 2018, 04:47 PM

এর প্রতিবাদে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৭টি ইউনিয়ন ও পৌর শাখার সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্তত আড়াই হাজার নেতাকর্মী পদত্যাগ করছেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৫ আসনে বিএনপি মণিরামপুর উপজেলা সভাপতি শহীদ ইকবাল ও ২০ দলীয় জোট শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নেতা মুফতি ওয়াক্কাসকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়। পরে মুফতি ওয়াক্কাসকে চূড়ান্ত করা হয়।

এদিকে, রোববার দুপুরে মুফতি ওয়াক্কাসের ছেলেকে বহনকারী একটি মাইক্রোবাস ভাংচুর করেছে একদল লোক।

উপজেলা বিএনপি সভাপতি শহীদ ইকবাল হোসেনের একান্ত সহকারী আইয়ুব আলী জানান, রোববার সকাল ৯টা থেকে নেতাকর্মীরা তাদের পদত্যাগপত্র নিয়ে দলের উপজেলা কার্যালয়ে আসেন। এরপর তারা শহীদ ইকবাল হোসেনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরে সেগুলো দলের জেলা সভাপতি বরাবর পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় আড়াই হাজার নেতাকর্মী পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলে দলের উপজেলা অফিস থেকে জানা গেছে।

পদত্যাগের কারণ হিসেবে কাশিমনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আহাদ আলী বলেন, “গত এক মাসে আমার ইউনিয়নের প্রায় আড়াইশ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। মণিরামপুর উপজেলায় গত পাঁচ বছরে ১১-১২ জন নেতাকর্মী ক্রসফায়ারে মারা গেছেন।

“এদের কারো পরিবারের খোঁজ নেওয়া তো দূরের কথা, তাদের জানাজায় মুফতি ওয়াক্কাস কেনো, তার ছেলেরাও কোনোদিন আসেননি। তাছাড়া মামলার ব্যাপারে কোনোদিন ওয়াক্কাস বিএনপির নেতাকর্মীদের খোঁজও নেননি।

“তারপরও যদি ওয়াক্কাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, সেই দুঃখ রাখার আর জায়গা হয় না। তাই মনের কষ্টে পদত্যাগ করেছি।”

পদত্যাগপত্র গ্রহণের কথা নিশ্চিত করে শহীদ ইকবাল হোসেন বলেন, গণবিচ্ছিন্ন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের মধ্যে পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু গণপদত্যাগের বিষয়টি ‘অসমর্থিত সূত্রে’ জানতে পেরেছেন, কিন্তু এখনও হাতে পাননি জানিয়ে বলেন, যেহেতু সেখানে হামলা-মামলার শিকার বিএনপির জনপ্রিয় একজন প্রার্থী ছিলেন, তাকে পাশ কাটিয়ে আরেকজনকে প্রার্থী করায় এমনটি হতে পারে।

তবে তা প্রশমিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিকে মুফতী ওয়াক্কাসের বড় ছেলে মুফতি আব্দুর রশিদ বলেন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম, উপজেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা আজিজুর রহমান ও তার ছোট ভাই মুফতি হুসাইনসহ সংগঠনের ৮/১০ নেতাকর্মী একটি মাইক্রোবাসে যশোরে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হন।

স্থানীয় সরকারি কলেজের সামনে একদল যুবক গাড়িতে হামলা করলে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে তিনি জানান।

মণিরামপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইকবাল হোসেনের ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিস্তার ফারুককে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে বেলা ৩টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব হাসান বলেন, বিষয়টি তারা শুনেছেন। তবে কেউ অভিযোগ করেনি।