বেগম রোকেয়া দিবসে নানা অনুষ্ঠান পায়রাবন্দে

বেগম রোকেয়া দিবস ৯ ডিসেম্বর। নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এই দিনে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজলোর পায়রাবন্দের এক নিভৃত পল্লিতে জন্ম নেন।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2018, 03:00 PM
Updated : 9 Dec 2018, 04:07 PM

১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া এই মহিয়সী নারী ১৯৩২ সালে একই দিনে কলকাতার সোদপুরে মৃত্যুবরণ করেন।

দিবসটি পালন উপলক্ষে বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান পায়রাবন্দসহ রংপুরের বিভিন্ন স্থানে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বেগম রোকেয়া দিবসে রোববার সকালে রংপুর জেলা প্রসাশনের উদ্যোগে পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়ার স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

পায়রাবন্দে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া রংপুর মহানগরীতে বিভিন্ন নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে অলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি, নির্ধারিত বক্তৃতা, কুইজ প্রতিযোগিতাসহ সচেতনামূলক নাটিকা প্রদর্শনী, সম্মাননা স্মারক প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসনের তিন দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রোববার প্রথম প্রহরে পায়রাবন্দে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা শুরু; সকাল ৯টায় পুষ্পমাল্য অর্পণ; ১০টায় পায়রাবন্দ জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল; সকাল সাড়ে ১০টায় বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত স্বেচ্ছায় রক্তদান ও রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা এবং বিকাল ৪টায় তিন দিনব্যাপী রোকেয়া মেলার অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা শেষে সন্ধ্যায় নাটিকা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়।

দ্বিতীয় দিন সোমবার (১০ ডিসেম্বর) রয়েছে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, রচনা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, নাটিকা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন।

১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সমাপনী দিনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সংসদীয় বিতর্ক, বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, আলোচনা সভা, গুণীজন পদক প্রদান, নাটিকা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

এছাড়াও রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রংপুর মহানগরীসহ জেলা আট উপজেলায় বিভিন্ন নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে অলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি, নির্ধারিত বক্তৃতা, কুইজ প্রতিযোগিতাসহ সচেতনতামূলক নাটিকা প্রদর্শনী, সম্মাননা স্মারক প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
বেগম রোকেয়ার বাবা জহির উদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের ও মা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী। ১৮ বছর বয়সে খান বাহাদুর সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ২৮ বছর বয়সে স্বামী হারান তিনি। ১৯১০ সালের শেষ দিকে কোলকাতায় যান রোকেয়া। এরপর তিনি দুই পারেই নারী জাগরণ ও উন্নয়নে কাজ করেছেন।

রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার ব্যবস্থায় নারীর সমান অধিকারের জন্য মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়া আমৃত্যু লড়াই করেছেন। তিনি তার মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী ইত্যাদি কালজয়ী গ্রন্থে ধর্মীয় গোঁড়ামি, সমাজের কুসংস্কার ও নারীর বন্দিদশার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন।

বাল্যবিবাহ, যৌতুক, পণ প্রথা, ধর্মের অপব্যাখ্যাসহ নারীর প্রতি অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়িয়েছেন। মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে নারীকে গৃহকোণে আবদ্ধ রাখার ধ্যান-ধারণা পাল্টাতে তিনি সোচ্চার ছিলেন। তার দেখিয়ে দেওয়া পথ ধরেই নারীমুক্তি আন্দোলন চলছে।