এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়

গোপালগঞ্জে এসএসসির ফরম পূরণে জনপ্রতি ছয় হাজার টাকা করে আদায় করেছেন একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2018, 04:20 PM
Updated : 7 Dec 2018, 04:20 PM

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় জে কে এম বি মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সমর রায় চৌধূরী বৃহস্পতিবার এ অভিযোগ দায়ের করেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সমর রায় চৌধূরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৮ সালের এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় স্কুলের ৩৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ১৭৫ জন কৃতকার্য এবং ১৭৫ জন অকৃতকার্য হন।

এসএসসির ফরম পূরণে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ১৬৬৫ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগে ১৮০০ টাকায় আদায় করতে বোর্ডের নির্দেশ বলে তিনি জানান।

পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ ব্যাপারে কঠোর সতর্কতা জারি করার বিষয়টিও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।

তিনি বলেন, “এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষক নির্মল সাহা অকৃতকার্যদের এসএসসির ফরম পূরণে ৬ হাজার টাকা আদায় করেছেন।”

এ কাজটি করার জন্য প্রধান শিক্ষক নির্বাচনী পরীক্ষার বেশ কিছুদিন পর অকৃতকার্যদের গোপনে পরীক্ষা নিয়ে কৃতকার্য দেখান বলেও সমরের ভাষ্য।

তিনি আরও বলেন, কৃতকার্যদের মধ্যে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণে ৩ হাজার টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণে ৩ হাজার ২শ টাকা করে আদায় করেছেন প্রধান শিক্ষক।

প্রতি বছর পরীক্ষা এলেই প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করেন বলে স্কুলটি ম্যানেজিং কমিটির এই সদস্য অভিযোগ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে  ওই স্কুলের একাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী জানান, এসএসসির ফরম পূরণে প্রধান শিক্ষক তাদের কাছ থেকে ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন। স্কুলের অনেক শিক্ষার্থীই গরীব ও অসহায়। তাদের অভিভাকের অতিরিক্ত টাকা দিতে ধার দেনা করতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নির্মল সাহা অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন চাপের কারণে অকৃতকার্যদের ফরম পূরণের সুযোগ করে দিতে হয়েছে। এছাড়া বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করতে সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে।

অকৃতকার্যদের পুনরায় পরীক্ষা নিয়ে কৃতকার্য করা হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছি।”