হানাদারমুক্ত হওয়ার এই দিনটি পালন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে শহরের জেল রোডে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
পরে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে স্মৃতিস্তম্ভ থেকে এক বর্ণাঢ্য পতাকা শোভাযাত্রা শুরু হয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
এদিকে, ‘তরুণ সংঘ’ নামে স্থানীয় একটি সংগঠন মুক্ত দিবস উপলক্ষে ৭১ জন সদস্য হেঁটে ফেনী সীমান্তের ৫০ কিলোমিটার অতিক্রম করার কর্মসূচি পালন করে।
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব জানান, ফেনী অঞ্চলের মুক্তিবাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন তৎকালীন ক্যাপ্টেন জাফর ইমাম, পরে যিনি বীর বিক্রম উপাধি পান। তিনি ভারতের বিলোনীয়া ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল থেকে ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অভিযান চালান।
“এ সময় তারা সীমান্তবর্তী বিলোনিয়া, পরশুরাম, মুন্সিরহাট, ফুলগাজী হয়ে যুদ্ধ করতে করতে এগুতে থাকলে ফেনীর পাক হানাদার বাহিনীর একটি অংশ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী হয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের রাস্তায় এবং অপর অংশ শুভপুর ব্রিজের উপর দিয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।”
“মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পাক হানাদাররা ৫ ডিসেম্বর রাতে কুমিল্লার দিকে পালিয়ে পায়।”
সে সময় ফেনী অবাঙালি মহকুমা প্রশাসক বেলাল এ খানও পাকবাহিনীর সঙ্গে চলে যান। ফেনী হানাদারমুক্ত হওয়ার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে জানান মোতালেব।
ফেনী অঞ্চলের মুক্তিবাহিনীর অধিনায়ক বীর বিক্রম জাফর ইমাম বলেন, একাত্তরের ৬ ডিসেম্বর ফেনী মুক্ত হলেও পাকহানাদারদের প্রথম আত্মসমর্পণ ছিল ফেনীর বিলোনিয়ায়। চূড়ান্ত বিজয়ের ৩৬ দিন আগে ১০ নভেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দুজন অফিসারসহ ৭২ জন সৈনিক আত্মসমর্পণ করেছিল।
নৃশংস এই হত্যায় মকবুলসহ যেসকল যুদ্ধাপরাধী জড়িত তাদের আইনের আওয়তায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
একই সঙ্গে ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ফেনীর পলাকত কুখ্যাত রাজাকার চৌধুরী মাঈনুদ্দিনকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকরের জন্য সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।