বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সামনে এ আবেদন করেন রাঙামাটির নানিয়াচর সার্কেলের ইউপিডিএফের বিচার ও সাংগঠনিক পরিচালক আনন্দ চাকমা ওরফে পরিচিৎ।
সদর থানার ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু জানান, বুধবার রাতে মহালছড়ি সেনা জোন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদের কাছে অস্ত্র ও গুলিসহ তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন।
আনন্দ চাকমা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মনোরঞ্জন চাকমার ছেলে। আত্মসমর্পণের সময় তিনি একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগজিন জমা দেন বলে জানান ওসি।
আনন্দ চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, আদর্শহীন ইউপিডিএফ-এর খুন, গুম, অপহরণ ও চাঁদাবাজির কারণে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আশায় তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন।
“সরকার ঘোষণা দিলে অনেক ইউপিডিএফ নেতাকর্মী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করছে।”
রাঙামাটির নানিয়াচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)-এর প্রধান তপন জ্যোতি ওরফে বর্মাসহ বহু মানুষকে ইউপিডিএফ হত্যা করেছে। এছাড়া অপহরণ ও চাঁদা আদায় হলো তাদের প্রতিদিনের কাজ।
ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)-এর কাছে বিপুল পরিমাণ একে-৪৭, এসএমজি, চাইনিজ রাইফেল, এলএমজি ও এম-১৬ এর মতো ভারী আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে বলে জানান আনন্দ।
“জীবনের ৩০ বছর আমি জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে জীবনযাপন করেছি; কিন্তু দুঃখের বিষয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায় ও তাদের উন্নতির যে লক্ষ্য নিয়ে যুবক বয়সে এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলাম তা থেকে ইউপিডিএফ সম্পূর্ণভাবে বিচ্যুত।”
ইউপিডিএফের কোনো নীতি ও আদর্শ নেই অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “তারা সকলেই রক্তের নেশা ও ক্ষমতার মোহে পড়ে আছে। চাঁদাবাজি, মানুষকে হয়রানি আর ভয়ভীতি ও অন্যায়-অত্যাচার করে সকলে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। গুম, খুন, হত্যা ও অপহরণই বর্তমানে তাদের কাজ।”
আনন্দ তার স্ত্রী, এক ছেলে ও স্নাতক ৩য় বর্ষে পড়ুয়া একটি মেয়ে রয়েছে উল্লেখ করে অনেক ভেবে-চিন্তে ‘অন্যায়ের পথ ছেড়ে’ সুস্থ, স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ জীবনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান।
তার মতো ইউপিডিএফের অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়; কিন্তু ইউপিডিএফ হত্যার ভয় দেখায় বলে পারছে না বলে জানান আনন্দ।
সদরের ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আনন্দ এখন সেনা হেফাজতে আছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হবে।