রাবি শিক্ষার্থীকে ‘পিটিয়ে মুক্তিপণ নিলেন ছাত্রলীগ নেতা’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হলকক্ষে আটকে রেখে মারধর করে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাসহ দুইজনের বিরুদ্ধে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2018, 08:39 AM
Updated : 9 Nov 2018, 08:47 AM

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ফার্সি-সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাফিউর রহমান শাফি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আল ফারুক।

শাফি নিজে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ঘটনা স্বীকার করেছেন।

ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাইম আমাকে সোহরাওয়ার্দী হলে বড় ভাইদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে আসেন।

“আসামাত্রই আমাকে ১৯১ নম্বর কক্ষে নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে শাফি আমার মোবাইল ফোন নিয়ে ফেইসবুক লগইন করে বলেন, ‘তুই শিবির করিস, তুই এই পেইজে লাইক দিছোস।’ আমি অস্বীকার করলে তারা আমাকে মারধর করেন। চড়থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে রড দিয়েও পিঠে আঘাত করেন।

“পরে তারা আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে বলেন, ‘যদি না দিস তবে হাড়গুড় ভেঙ্গে পুলিশে দিয়ে দিবো।’ পরে আমি আমার বাবাকে ফোন দিই। বাবা ১০ হাজার টাকা পাঠান আর আমার বড় ভাই ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠান। পরে তারা আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলেন, ‘এই কথা যদি কাউকে বলিস, তবে তোর খবর আছে’!” 

শাফি ঘটনা প্রথমে অস্বীকার করে বলেন, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। কিন্তু সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে তিনি ঘটনা স্বীকার করে বলেন, “সব টাকা নাইমের কাছে আছে।”

আর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ২০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “শাফিকে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেব। সে কেন এ ধরনের কর্মকাণ্ড তার কক্ষে স্থান দিল সেই মর্মে তাকে শোকজ করা হয়েছে। তবে আগে টাকা উদ্ধার করতে হবে।

“টাকা তো নাইমের কাছে। নাইম ছাত্রলীগের কেউ না। শুক্রবার রাত ৮টায় এ হলের এখানেই ফারুকের ২০ হাজার টাকা সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আর নাইমের বিরুদ্ধে অপহরণ বা অন্য কোনো মামলা দায়ের করা হবে।”

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

তবে প্রক্টর লুৎফর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি পুলিশ প্রশাসনকে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি অবহিত করেছি। আমার সব ধরনের ব্যবস্থাই ছিল।

“আমি ফারুককে ফোন দিয়েছি সকালে। তার বাবার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। আর যেহেতু অভিযুক্তদের পাওয়া গেছে, তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে আইন অনুযায়ী।”