ভুরঘাটা খালের দক্ষিণ পাশে বরিশালের গৌরনদী, উত্তর পাশে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা। এই খালটি ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের সীমানা নির্ধারণ করেছে।
এই খালে সারা বছরই চলে কোটি টাকার বাঁশ বেচাকেনা। বরিশাল ও মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের মানুষেরা এখান থেকে বাঁশ কিনতে আসে।
এই হাটে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫০ বছর ধরে ভুরঘাটায় এই হাটে বাঁশ বেচাকেনা হচ্ছে। এখানকার ব্যবসায়ীরা শরীয়তপুরের জাজিরা, ফরিদপুরের বোয়ালমারি ও রংপুর থেকে ‘বন’, ‘তল্লা’, ‘ওরা’, ‘বরা’ প্রভৃতি বিভিন্ন জাতের বাঁশ কিনে এনে এখানে বিক্রি করেন। খালের দুই পাড়ের দুই জেলার প্রায় ব্যবসায়ীরা এখানে দশক দশক ধরে বাণিজ্য করে আসছেন। তাই এই হাটের সুনাম দেশের পুরো মধ্যাঞ্চল জুড়েই রয়েছে।
ব্যবসায়ী রহমান ঘরামী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি গত ৩৫ বছর ধরে ভুরঘাটায় বাঁশের ব্যবসা করে আসছি। এখানে দেশের মধ্যাঞ্চলের অনেক এলাকা থেকে ক্রেতারা এসে বাঁশ কিনে নিয়ে যান। বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে পান চাষ বেশি হয়; সেসব এলাকার মানুষই এখানে বাঁশ কিনতে বেশি আসে। প্রতিটি বাঁশ ধরণ অনুযায়ী দুশ টাকা থেকে তিনশ কিংবা চারশ টাকাও দাম হয়ে থাকে।”
৩০ ফুট লম্বা একটি বন বাঁশের দাম তারা ২শ টাকা থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি করেন বলে তিনি জানান।
আরেক ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী বলেন, “আমি ভুরঘাটায় ২০ বছর ধরে বাঁশ বিক্রি করছি। এই ব্যবসাটাই আমার পেশা। এই হাটে মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে প্রচুর ক্রেতা আসে।
“আমরা খুব ভালো মানের বাঁশ বিক্রি করি। আমাদের বেচা কেনাও খুব ভালো। এটাই করেই তো বেঁচে আছি। আমি বাঁশ মূলত শরীয়তপুরের জাজিরা থেকে সংগ্রহ করে এখানে বিক্রি করি।”
গৌরনদী থেকে আসা ক্রেতা আজম বেপারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কিছু বাঁশ কিনতে এসেছি। আমার পানের বরজ আছে। পানের বরজে বাঁশ লাগবে; তাই ভুরঘাটা এসেছি। এখানকার বাঁশের গুণগত মান ভালো। দামও অন্য এলাকার চেয়ে কম।”
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিএমএ গফুর বলেন, কালকিনির ভুরঘাটার বাঁশের হাট বেশ জনপ্রিয়। এখানে অনেক এলাকা থেকে বাঁশ কিনে এনে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন।
মাদারীপুর সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় চাষিরা বাঁশ চাষ শুরু করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে ক্রেতাদের আগ্রহের বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা বলেতে পারি মাদারীপুরের ভুরঘাটার এই বাঁশের হাটটি মধ্যঞ্চলের প্রধান হাটে পরিণত হচ্ছে।”