সংলাপে বিদেশি চাপ নেই: আইনমন্ত্রী

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের পেছনে কোনো বিদেশি চাপ নেই বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। 

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Oct 2018, 12:27 PM
Updated : 30 Oct 2018, 12:27 PM

মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জে তিনি বলেন, সংলাপরে জন্য ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছেন, তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে গণতন্ত্র অর্জিত হয়েছে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য সংবিধানসম্মত যেকোনো আলোচনার ব্যাপারে তার দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। এতেই বোঝা যায় কোন বৈদেশিক চাপে সংলাপ হচ্ছে না।

আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে চিঠি দেন কামাল হোসেন।

‘সংবিধানসম্মত সকল বিষয়ে’ আলোচনার জন্য কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আইনমন্ত্রী বলেন, “আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মমর্যাদাশীল একজন ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশকে তিনি একটি মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন। তিনি কোনো বিদেশি চাপে নত হওয়ার মতো মানুষ না। তারপরও আমি বলব বিদেশি কোনো চাপ ছিল না।”

“রাজনৈতিক কোন সমস্যা নেই এবং বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে চলছে” মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, “সংবিধানের ব্যতয় ঘটিয়ে বাংলাদেশে এই সরকার কোনো কিছুই করেনি এবং সংবিধানের ধারাবাহিকতায় সংবিধানসম্মত যে কাজ আমরা সেই কাজ করে যাব।”

এ সময় আইনমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়েও কথা বলেন। 

তিনি বলেন, সংবিধানে বলা আছে কোনো ব্যক্তির যদি নৈতিক স্খলনের জন্য দুই বছরের বেশি সাজা হয় তবে তিনি সাজা খাটার পরও আরও পাচঁ বছর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না; কিন্তু এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোট অব বাংলাদেশে দুটি রায় আছে।

“একটি রায়ে বলা আছে, আপিল বিভাগে আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত যদি সাজা স্থগিত করেন তবে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। আরেকটি বিভক্ত রায় আছে, একজন বিচারক বলেছেন নির্বাচন করতে পারবেন, আরেকজন বলেছেন পারবেন না।”

মন্ত্রী বলেন, “সকল আইনের ঊর্ধ্বে হচ্ছে সংবিধান। আমার মনে হয় আদালতই সিদ্ধান্ত দিবেন তিনি নির্বাচন করতে পারবেন কি পারবেন না।” 

দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাদঁমারী এলাকায় নবনির্মিত জেলা রেজিস্ট্রার ভবনের উদ্বোধন শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, রাজস্ব খাতে রেজিস্ট্রি অফিস প্রতি বছর কমপক্ষে ১৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করে সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে আসছে; কিন্তু এই রেজিস্ট্রি খাতকে অন্যান্য সরকার অবহেলা করেছে, এমনকি প্রাপ্ত মর্যাদাটুকুও দেয়নি।

তিনি বলেন, দলিল লেখকরা টিনের বেড়ার ঘরে মাটিতে পাটি বিছিয়ে অনেক কষ্টে দলিল লিখে সম্পাদন করেছেন। রেজিস্ট্রি ভবন তো দূরের কথা নিজস্ব কোনো জমিই ছিল না। নারায়ণগঞ্জ এর ব্যতিক্রম ছিল না।

“রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ছিল হতাশা। কিন্তু বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এসব প্রতিকূল অবস্থা থেকে দেশের রেজিস্ট্রি অফিস অনেকদূর এগিয়েছে।”

দেশের প্রতিটি জেলায় জেলায় সাব-রেজিস্ট্রার বাংলাদেশ নিবন্ধন মহাপরিদর্শকের অফিসের মাধ্যমে সরকার এই খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধন করেছে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ নিবন্ধনের মহাপরিদর্শক খান মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ হোসনে আরা বাবলী, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহারসহ প্রমুখ।