শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার দশমাইল এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আহত হন আরও ২০ জন। এরা সবাই বাসের যাত্রী।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এহেতেশাম রেজাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ গোলাম আজম জানান। আগামী ৩ দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের গোয়ালঝাড় গ্রামের সকিন আলীর (৬৭) মেয়ের জামাই এ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি রয়েছেন জেলা সদর হাসপাতালে।
সকিন বলেন, “স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে র্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বাসটি চুরমার হয়ে গেছে। লোকজনের ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখি ৩/৪টি দেহে কোন মাথা নাই। শুধু শরীর বাসের ছিটে পড়ে আছে।”
পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার যাওয়ার পথে দুই বোন পরিবহনের একটি মিনিবাস দশমাইল এলাকায় পৌঁছালে ভজনপুর থেকে ছেড়ে আসা একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিবাহী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও পাঁচ জন মারা যান বলে পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আবু আক্কাস আহমদ জানান।
নিহতরা হলেন- পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের জোতহাসনা গ্রামের সাইদুল ইসলামের স্ত্রী লাভলী বেগম (২৯) ও ছেলে ইয়াছিন আলী (৭), শিতলীহাসনা গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে রেজাউল (২২), বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের উৎকুড়া গ্রামের পুতিন রায়ের ছেলে অনিত্য রায় (২০) তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের গরিয়াগছ গ্রামের সফিকুল ইসলামের ছেলে ইউনুস আলী (২৮) ও তার আরেক ছেলে ইউসুফ আলীর ছেলে মনির হোসেন (৬), গুয়াবাড়ি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে রাসেল (২০), মোমিনপাড়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে মোজাম্মেল (৩৮), বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের উত্তর কাসেমপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (৩০) ও ডাঙ্গাপাড়া এলাকার ওমর আলীর মেয়ে রাহেলা বেগম (২৫)।
সদর হাসপাতালে কথা হয় তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের বামনপাড়া গ্রামের ২২ বছর বয়সী আহত সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে।
প্রত্যক্ষদর্শী মাইল বাজার এলাকার আলী আকবর বলেন, “এত্তি অনেক এক্সিডেন দেখিছি কিন্ত এনোং দেখুনি। মাথালা রাস্তাত পড়ে আছে আর শরীরটা গাড়ির ভিতরত। আল্লাহ যেন কারোহ্ কপালত এনোং না দেয়। ”
এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিস দলের এক সদস্য দুঘটনার পর ঘটনাস্থলে তিনজনের মাথা বিচ্ছিন্ন মৃতদেহ পাওয়ার কথা জানান।