কুষ্টিয়ায় স্কুলছাত্র হত্যায় তিন আসামির ফাঁসির রায়

কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ছাত্র মুতাসসিম বিন মাজেদ হৃদয়কে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় তিন আসামির ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2018, 05:42 AM
Updated : 25 Oct 2018, 01:22 PM

বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিউর রহমান সাত বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। 

আসামিদের মধ্যে মো. সাব্বির খান রায়ের সময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামি হেলাল উদ্দীন ওরফে ড্যানী এবং আব্দুর রহিম শেখ ওরফে ইপিআর পলাতক।

রায়ে একটি ধারায় আসামিদের তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য একটি ধারায় তাদের সবাইকে যাবজ্জীবন সাজা ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন বিচারক।    

মামলার নথি থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় ২০১১ সালের ২৩ মে বিকালে মোল্লাতেঘড়িয়া পূর্বপাড়ার বাসা থেকে খাতা কিনতে বেরিয়ে অপহৃত হয়। পরদিন গড়াই নদীর তীরে তার সাইকেলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এরপর ২৬ মে অপহরণকারীরা হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুনকে ফোন করে ১৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

তাসলিমা দুই লাখ টাকা নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিলেও হৃদয়কে মুক্তি না দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ মাটি চাপা দেয় অপহরণকারীরা।

এদিকে হৃদয় নিখোঁজ হওয়ার পর তার সন্ধান দাবিতে জিলা স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। তার নিখোঁজ থাকার কথা জানিয়ে ৩১ মে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি জিডি করেন তাসলিমা।

ওই জিডির সূত্র ধরে তদন্তে নেমে সদর উপজেলার হাউজিং এলাকা থেকে হেলাল উদ্দিন ড্যানীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণের ১৩৪ দিন পর ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ১২মাইল এলাকার একটি পাটক্ষেত থেকে হৃদয়ের দেহাবশেষ উদ্ধার করে পুলিশ।

তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি আকরাম হোসেন দুলাল জানান, আসামিদের মধ্যে ড্যানী গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিন নিয়ে পালিয়ে যায়।

“দীর্ঘ শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘সন্দেহাতীতভাবে’ প্রমাণিত হওয়ায় বিচরক আজ তাদের সর্বোচ্চ সাজার আদেশ দিয়েছেন। ”

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হৃদয়ের মা তাসলিমা পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত সাজা কার্যকরের দাবি জানান।