খাগড়াছড়িতে বুদ্ধমূর্তি ভাংচুর, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রবারণা পূর্ণিমার উৎসবের একদিন আগে খাগড়াছড়ির গুইমারায় নবনির্মিত একটি বৌদ্ধ বিহারে হামলা ও বুদ্ধমূর্তি ভাংচুর করেছে অজ্ঞাত লোকজন।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2018, 03:04 PM
Updated : 23 Oct 2018, 03:04 PM

সোমবার রাতে হাফছড়ি ইউনিয়নের কুকিছড়া এলাকায় নির্মিত ‘জেতবন বৌদ্ধ বিহারে’ এ হামলা হয়।

এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বুদ্ধমূর্তিটি পুনঃস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।  

২০১৭ সালের জুন মাসে কুকিছড়া এলাকায় স্থানীয়রা জেতবন বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ করেন।

হাফছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার রাতে দুর্বৃত্তরা বিহারে স্থাপিত একটি বুদ্ধমূর্তি ও স্থাপনা ভাংচুর করে।

“রাতে বিহারে কেউ না থাকায় কে বা কারা এ ঘটনা করেছে তা বলা যাচ্ছে না।”

বুধবার শুরু হবে প্রবারণা পূর্ণিমার উৎসব। চলবে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের আগে এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ এ সম্প্রদায়ের লোকজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় গুইমারা রামসু বাজারে বিক্ষোভ মিছিল এবং গুইমারা বাজার ব্রিজে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেতবন বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষু জ্যোতিছড়া।

তিনি বুদ্ধমূর্তি ভাংচুরের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং বুদ্ধমূর্তি পুনঃস্থাপনের দাবি জানান।

গুইমারা থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে বিনষ্ট করতে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনায় কারা জড়িত তা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। বিহার কর্তৃপক্ষের কেউ এখনও থানায় অভিযোগ করেনি বলে তিনি জানান।

ঘটনার পর সেনাবাহিনী, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাউদ্দিন, গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া, গুইমারা থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন, গুইমারা ইউপি চেয়ারম্যান মেমং মারমা, হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী, ৩নং সিন্দুকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রদোক মারমা, জ্যোতিছড়া ভিক্ষু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ বড়ুয়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বুদ্ধমূর্তিটি পুনঃস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

মাটিরাঙ্গা সেনা জোন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাইসুল ইসলাম বলেন, “বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান এবং ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা। এই উৎসবটিকে ভণ্ডুল করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে প্রশাসনে উপর দায় চাপানের চেষ্টা করছে।”

যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে, বলেন এই সেনা কর্মকর্তা।