বেনাপোলে পূজা পর্যটকদের চাপ

দুর্গোৎসব উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে বিপুলসংখ্যক ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আসছেন।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Oct 2018, 06:47 AM
Updated : 15 Oct 2018, 08:01 AM

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আবুল বাশার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এবার বাংলাদেশে ভ্রমণেচ্ছুদের চাপ অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে অনেক বেশি।

“দুর্গাপূজার ছুটি কাটাতে ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসছে তারা।”

সোমবার কলকাতার দমদমের উত্তম চৌধুরী স্ত্রী রিনা চৌধুরী ও একমাত্র সন্তান রাজদ্বীপ চৌধুরীকে নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন; বেনাপোলে কথা হয় তাদের সাথে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে উত্তম চৌধুরী বলেন, “পূজা করতে নরসিংদীতে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছি। পূজার সময় কখনো আসতে পারেনি।

“মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার সরকারি কর্মীদের টানা ১৩ দিনের ছুটি দিয়েছে। তাই শ্বশুর বাড়ির আত্নীয়-স্বজনদের সাথে পূজাটা খুব ভাল কাটবে।”

কলকাতার ফ্রি স্ট্রিট রোডের সরজিত রায় (৪৬), বাগুইহাটির অমিত বসু (৫০) ও উত্তর চব্বিশপরগনার গোপালনগরের আকিইপুরের হিরন সরকার (৪৫) সপরিবার বাংলাদেশের হিন্দু তীর্থস্থানগুলো দেখার জন্য এসেছেন।

সরজিৎ রায় সাথে নিয়ে এসেছেন স্ত্রী কবিতা রায় ও মেয়ে মৌমিতা রায়কে আর হিরন সরকারের সাথে আছেন স্ত্রী সুস্মিতা সরকার, ছেলে সঞ্জয় সরকার (১৫) ও মেয়ে অর্চনা সরকার (১২)।

সরজিৎ রায় বলেন, “সরকারি চাকরি করি, তাই ঘুরে বেড়ানোর সময় পাই না, পরিবারে সময় দিতে পারি না। এবার পূজার লম্বা ছুটি থাকায় বাগেরহাট বেড়াতে যাচ্ছি। সেখানে কিছু আত্মীয় আছেন, তাদের সঙ্গে দেখা করব।”

বাগেরহাটের হাকিমপুরের শিকদার বাড়িতে গড়া ৭০১টি প্রতিমা নিয়ে বিশাল দূর্গাপূজার আয়োজন দেখার ইচ্ছা রয়েছে বলেও তিনি জানান।

ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশিসংখ্যক ভারতীয় ছুটি কাটাতে বাংলাদেশে যাচ্ছেন।

“ভারতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে দীপাবলী বা কালীপূজা হলেও দুর্গোৎসব বাংলাদেশেই বেশি আড়ম্বরপূর্ণ হয়।”

কলকাতার অমিত বসু ও সুস্মিতা বসু ঢাকার শ্যামবাজারে যাবেন আত্মীয়বাড়ি বেড়াতে।

অমিত বসু বললেন, “শ্যামবাজারের গকুল চন্দ্র স্টেটের মন্দিরের নাম শুনেছি, দেখা হয়নি। ওখানে যাব, পুজো দেব, আত্মীয়-স্বজনের সাথে এবার পুজোটা জমিয়ে করব।”

কলকাতার বাগুইহাটির রঞ্জন দাস বলেন, “কাজের চাপে এত দিন সময় করে উঠতে পারিনি। লম্বা ছুটি পাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছি।”

চব্বিশ পরগনার গোপালনগরের সুস্মিতা সরকার বলেন, “এপারে আসলাম বাংলাদেশি আত্মীয়-স্বজনদের সাথে পূজার উৎসব ভাগাভাগি করতে। একই সাথে বাংলাদেশের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার ইচ্ছাও রয়েছে।”

সুস্মিতা সরকারের মেয়ে অর্চনা সরকার বলেন, “বাংলাদেশে কখনো আসিনি। এবারই প্রথম। আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে। পূজোর কটা দিন খুব মজা করব। বাংলাদেশের হিন্দু তীর্থস্থানগুলো দেখার ইচ্ছাও রয়েছে।”