তারপর থেমে যায় ৪৪ বছরের কোলাহল। শুক্রবার এ হলে আর কোনো প্রদর্শনী হয়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে শেষবারের মত সিনেমা দেখতে এসেছিলেন অনেকে; যাদের কণ্ঠে আকুতি ঝরেছে হলটি বন্ধ হওয়ার খবরে।
বিভাগীয় শহরে একটি হলও থাকবে না এটা তিনি মানতে পারছেন না বলে জানান।
শেষ দিনের প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলি আহমেদ নিশানসহ অনেকে।
নিশান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ হলে দোতলায় আমার একটি পছন্দের আসন আছে। আজ সেখানে বসেই এ হলের শেষ চলচ্চিত্রটি দেখলাম।
দলবেঁধে হলে এসে সিনেমা দেখার যে সংস্কৃতি এখানে গড়ে উঠেছিল তা আর থাকছে না বলে আক্ষেপ করলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকা ‘ম্যাজিক লণ্ঠনের’ সহকারী সম্পাদক হিরু মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, “একটা বিভাগীয় শহরে যদি বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে কোনো সিনেমা হল না থাকে, তাহলে সেই শহরের কোনো পূর্ণতাই থাকে না। সিনেমা দেখার যে পরিবেশ লাগে, সেটা আপাতত রাজশাহীর মানুষ আর পাচ্ছে না।
“যেকোনো মূল্যে এই হলটি রক্ষা কিংবা অন্য কোনো হল যদি গড়ে তোলা যায় অতিসত্ত্বর, তাহলে রাজশাহী তার সাংস্কৃতিক পূর্ণতা পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
তিনি বলেন, “এখন হয়ত মোবাইল ফোনে সিনেমা দেখব। রাজশাহীতে তো আর কোনো হল রইল না যে সেখানে যাব।”
ব্যবস্থাপক তপন তাদের বন্ধ হয়ে যাওয়া হলটি সম্পর্কে জানান, প্রায় সাড়ে ২৪ কাঠা আয়তনের এ হলে একসঙ্গে এক হাজারের বেশি দর্শকের বসার জায়গা রয়েছে।
হলটি চালু রাখতে বৃহস্পতিবার রাজশাহী শহরে পাঁচটি চলচ্চিত্র সংগঠন মানববন্ধন ও হলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
এদিকে হলটি রক্ষায় কাজ চলছে বলে দাবি করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সাজ্জাদ বকুল।
তিনি বলেন, “প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে, মেয়র ও মালিকের সঙ্গে কথা বলে আমরা হলটি রক্ষা করব। সেই প্রক্রিয়া চলছে। আমরা যতটুকু আভাস পাচ্ছি তাতে আমরা হলটি চালু রাখতে সক্ষম হব।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ‘উপহার’-এর আগে আরও চারটি হল ছিল বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, উপহার ১৯৭৪ সালে স্নিগ্ধা নামে যাত্রা করে। মাঝখানে কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ১৯৮৫ সালে ‘অন্যায় অবিচার’ সিনেমা দিয়ে ‘উপহার’ নাম নিয়ে আবার চালু হয়।